নিহত সাংবাদিক শিরিনকে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২২ ১৭:০৮; আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৪২
 
                                ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত আল-জাজিরার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন হাজারো মানুষ। গত বুধবার ইসরায়েলি সেনারা জেনিন শহরে অভিযান চালান। সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে ছিলেন শিরিন আবু আকলেহ। ওই সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন। খবর এএফপির।
গতকাল বৃহস্পতিবার শিরিনের মরদেহ পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরে আনা হয়। এ সময় তাঁকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে শহরে ভিড় করেন হাজারো মানুষ।
জেনিন শরণার্থীশিবিরে সংঘর্ষের সময় আবু আকলেহর মৃত্যুর দায় ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ ঘটনার যৌথ তদন্তের কথা বলা হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ তদন্তে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কার্যালয় প্রাঙ্গণে শিরিনকে শ্রদ্ধা জানাতে কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত ছিলেন। ফিলিস্তিনি পতাকায় মোড়ানো তাঁর কফিন শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় হাজারো মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
সংবাদ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি শিরিনের মাথায় লাগে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আল-জাজিরার পক্ষ থেকে একে ঠান্ডা মাথায় খুন বলা হচ্ছে।
আব্বাস বলেন, এই অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। শিরিন আবু আকলেহর মৃত্যুর জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে দায়ী। তাঁর মৃত্যুর যৌথ তদন্তের জন্য ইসরায়েলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত বুধবার বলেন, শিরিন সম্ভবত ফিলিস্তিনিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্তজ বলেন, ‘ইসরায়েলের দিক থেকে সম্ভবত ফিলিস্তিনিরা গুলি ছুড়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, আবু আকলেহর হত্যাকাণ্ড ফিলিস্তিন ও আরব বিশ্বে শোকের ছায়া ফেলেছে। ৫১ বছর বয়সী আবু আকলেহ আল-জাজিরা আরবি টেলিভিশনের একজন জ্যেষ্ঠ সংবাদদাতা ছিলেন। এই চ্যানেল চালু হওয়ার পরের বছরেই ১৯৯৭ সালে তিনি এতে যোগদান করেছিলেন।
২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা মুক্তির আন্দোলনের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় আকারের আক্রমণের সংবাদ প্রকাশের জন্য ফিলিস্তিনের অনেকে শিরিনকে স্মরণ করেন।
সাংবাদিকতার ছাত্র আজহার খালাফ বলেন, ‘শিরিন আবু আকলেহর হত্যাকাণ্ডের খবরটি প্রত্যেক ফিলিস্তিনির মুখে চপেটাঘাতের মতো ছিল। তিনি ছিলেন মিডিয়া আইকন বা মডেল।’
আল-জাজিরাকে খালাফ বলেন, ‘তিনি প্রত্যেক ফিলিস্তিনির ঘরে ছিলেন। তিনি প্রত্যেক ফিলিস্তিনির কষ্টের কথা জানতেন। তিনি সত্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বর ছিলেন।’
আবু আকলেহকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা ৩৭ বছর বয়সী রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী হাজেম আবু হেলাল বলেন, শিরিন জনগণের কাছাকাছি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর বড় আকারের ছবি একটি পর্দায় রামাল্লা সিটি সেন্টারে প্রদর্শন করা হয়।
আবু হেলাল বলেন, প্রত্যেকে তাঁকে কেবল কাজের জন্যই নয়, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাঁর যুক্ত থাকার বিষয়ে জানত। তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবু হেলাল শিরিনকে ‘সদয়’ ও ‘পেশাদার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
শিরিন একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের জেরুজালেমের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আজ শুক্রবার তাঁকে ফিলিস্তিনের ওল্ড সিটিতে দাফন করা হবে।
বিষয়: সাংবাদিক হত্যা

 
                                                     
                                                    -2020-11-07-15-36-42.jpg) 
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: