মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক আসামি গ্রেফতার
রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১৬; আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৫

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. নুরুল আমিন হাওলাদারকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানিয়েছে, সে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানার হাতালিয়া গ্রামের মৃত সামছুল হক হাওলাদারের পুত্র।
আজ শুক্রবার র্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম বাসসকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি জানান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে নুরুল আমিন হাওলাদারসহ রাজাকার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার হাতালিয়া ও চরখালী এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে নুরুল আমিনসহ অন্যান্য রাজাকারা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের বৌদ্ধ বিহারী পল্লীর চিত্ত রঞ্জন বেপারী, সুধীন চন্দ্র বেপারী, শরৎ চন্দ্র মাঝি, রশিদ ঘরামী, ওপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, গঙ্গাচর, নিরোধ চন্দ্র বালা, অমূল্য, সমূল্য ও অনন্ত চাষিকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও তারা লুট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মত অপরাধে জড়িত ছিল। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালে নিহত নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে বিজয় চন্দ্র বালা পিরোজপুরের আদালতে নুরুল আমিন হাওলাদার ও তার সহযোগী অন্যান্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলা সূত্রের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, পরবর্তীতে আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তদন্ত শুরু করে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর শেষ করে। তদন্ত শেষে ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
আসামিদের বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের ৭ জনকে ধরে নিয়ে হত্যা, চরখালী গ্রামের সুরবালা দাসীকে ধর্ষণ, চরখালী গ্রামের চন্দ্র কান্তি মিস্ত্রি ও মনোরঞ্জন মিস্ত্রিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং পূর্ব পশারিবুনিয়া ও হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছাড়াও অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৪টি অভিযোগ আনা হয়।
এছাড়া ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলা দায়ের করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নুরুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে চলতি বছরের ২০ জুলাই নুরুল আমিন হাওলাদারের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল ।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: