বিদ্যুৎ এর বিকল্প খুঁজছে উদ্যোক্তারা

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ২১:৫৬; আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০৮:০১

ফাইল ছবি

দেশের উৎপাদন ব্যবস্থার প্রাণ হল বিদ্যুৎ। নানা সময়ে সংকট দেখা দেয় এই বিদ্যুৎ এর। ফলে এই সংকট থেকে পরিত্রাণে বিকল্প খুঁজছে উদ্যোক্তারা। খবর টিবিএসের।

বিকল্পের খোঁজে দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রদর্শনী এক্সপোতে সোলার প্যানেল এবং আধুনিক জেনারেটরের স্টলগুলোতে ভিড় করতে দেখা গেছে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলছে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি) এক্সপো অ্যান্ড ডায়ালগ ২০২২। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) এক্সপো ঘুরে করে দেখা গেছে, শিল্পোদ্যোক্তারা আধুনিক বৈদ্যুতিক জেনারেটর, সৌর, বায়ু এবং হাইড্রোর মতো ক্লিন এনার্জির স্টলগুলোতে ভিড় করছেন।

তারা বলছেন, প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে যেন বিকল্প ব্যবস্থায় তারা কারখানা চালু রাখতে পারেন, সেই প্রযুক্তি খুঁজছেন।

এক্সপোনেট এক্সিবিশন (প্রাইভেট) লিমিটেড আয়োজিত ১১তম এই আন্তর্জাতিক এক্সপো শুরু হয়েছে ১৩ অক্টোবর, আজ ১৫ অক্টোবর শেষ হবে এই প্রদর্শনী।

মেলায় ভারত, জার্মানি ও বাংলাদেশের প্রায় ৪৫টি প্রযুক্তি নির্মাতা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের আধুনিক প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে।

হক অ্যালুমিনিয়াম ওয়ার্কসের মালিক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে বিভিন্ন স্টল থেকে তথ্য নিতে ও লিফলেট সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

তিনি বলেন, "২ থেকে ৩ ঘন্টা বিদুৎ থাকে না। সামনে গ্যাসেরও সংকট হতে পারে। তাই কীভাবে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফ্যক্টরি চালু রাখতে পারবো সেগুলো দেখছি।"

রান পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড বিদেশ থেকে জ্বালানি সাশ্রয়ী জেনারেটর আমদানি করে। এই প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ আবদুর রহিম খান বলেন, "সম্প্রতি লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে। আমরা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী সর্বাধুনিক জেনারেটর সরবরাহ করে থাকি।"

ইফাদা ইলেকট্রনিকস বিক্রি করে সোলার ফ্যান, সোলার পাম্প, স্ট্রিট লাইট ও সোলার ডিভাইস। আরেক প্রতিষ্ঠান সুপার সেভার আইপিএস ইউপিএস সেবা দেয়।

ইফাদা ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার মিরাজ হোসেন বলেন, "সোলার বিষয়ে আমরা সব ধরনের সাপোর্ট দেই। আমাদের পণ্যের চাহিদা আগেও ছিল। তবে গত ছয় মাসের তুলনায় এখন চাহিদা বেড়েছে।"

বেসরকারি ৩ টি প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন নাজমুল হক। তিনি বলেন, "আমাদের প্রতিষ্ঠানের সোলার সাপোর্ট প্রয়োজন। তাই আমরা এখানে এসেছি কীভাবে কম খরচে এ সাপোর্ট পাওয়া যায় তা দেখতে। এক ছাদের নিচে আপনি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান পাবেন, যারা বিষয়ে কাজ করছে।"

তিনি বলেন, "আমরাদের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন ১২ ঘন্টা চলে। এখন দেখা যায় প্রতিদিন ৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এই সময়তো কারখানা চালু রাখতে হবে। কোন পদ্ধতিতে চালু রাখবো, কতটুকু জেনারেট ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করবো- সেটি যাচাই করছি। বিদ্যৎ চলে গেলে আমাদেরতো বসে থাকলে চলবে না।"

এক্সপোনেট এক্সিবিশন (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসকে মোঃ রাশেদুল হক বলেন, "পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহারে আমরা উৎসাহিত করছি। বিশেষ করে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, সিমেন্টসহ ভারী শিল্প কারখানার মালিকদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সচেতনতা তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য।"

তিনি বলেন, "এ বছর আমরা কৃষিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে ফসল উৎপাদনের নতুন সমাধান নিয়ে এসেছি।"

"তবে পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যের দাম একটু বেশি। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিক এ মেশিন কিনতে পারেন না। সরকারের উচিত তাদেরকে কিস্তিতে এই মেশিন কেনার সুযোগ করে দেওয়া," যোগ করেন তিনি।

মেলায় ১০টিরও বেশি এলইডি লাইট প্রতিষ্ঠানের স্টল দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের লাইট প্রদর্শন করা হচ্ছে স্টলগুলোতে।

ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বনসাল মোল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডও অংশ নিয়েছে মেলায়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সুধির বনসাল বলেন, "ভারত এখন বিদ্যুতে সংয়সম্পূর্ণ। ভারতে প্রচুর এলইডি লাইট ব্যবহার হয়। আমরা বাংলাদেশে পার্টনার খুঁজছি, বাংলাদেশে আমারা যৌথভাবে কারখানা স্থাপন করতে চাই।"

এছাড়া, মেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সেচ পরিচালনার বিষয়টি তুলে ধরে।

নিউজের লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top