সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙানো হচ্ছে বেশি

ডেস্ক নিউজ | প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৪১; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ২১:৫৫

ফাইল ছবি

সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে যে পরিমাণ টাকা আসছে, মানুষ ভাঙিয়ে ফেলছে তার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ডাকঘর সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর প্রবণতা অনেক বেড়েছে। এতে করে গত সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের নিট বিক্রি ৭১ কোটি টাকা কম। এর মানে বিক্রির তুলনায় সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয়েছে। সঞ্চয়পত্র থেকে প্রথম তিন মাসে সরকারের ঋণ ৩৩১ কোটি টাকা। বেশিরভাগ জিনিসের দাম বৃদ্ধির ফলে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে অনেকে এখন সঞ্চয় তুলে নিচ্ছেন- বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সূত্র: সমকাল ।

সঞ্চয় পরিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে মোট ৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আসল পরিশোধ করা হয়েছে ৭ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। ফলে নিট বিক্রি কমেছে। আগের মাস আগস্টে নিট বিক্রি মাত্র ৮ কোটি টাকা বেশি ছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেড়েছিল ৩৯৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রথম তিন মাসে ডাকঘর সঞ্চত্রে নিট ঋণ কমেছে ৪ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা। পাঁচ বছরমেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে কমেছে ৫৬৩ কোটি টাকা। তবে পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৩ হাজার ১৬৮ কোটি, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক ১ হাজার ৮৬৪ কোটি ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ৩৬৪ কোটি টাকা বেড়েছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, সরকারের বাজেট ব্যয়ের অন্যতম খাত হয়ে উঠেছে সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধ। ব্যাংক ঋণের সুদহার অনেক বৃদ্ধির পরও দুই ও পাঁচ বছরমেয়াদি বন্ডে এখনও ৮ শতাংশের কম সুদে ঋণ পাচ্ছে সরকার। আগের বছরের একই সময়ে যা ৫ শতাংশের কম ছিল। ফলে শর্ত আরোপের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করে আসছে সরকার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হয়। এর আগে ২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সব পর্যায়ে সঞ্চয়পত্র কেনার সীমা অনেক কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগে যেখানে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে আলাদা সীমার আলোকে কেনার সুযোগ ছিল। এ ছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় কেনার সুযোগ থাকলেও এখন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর ও পোস্ট অফিস সব জায়গা থেকে অভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারে ফলে সে সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ২১ হাজার ৫১১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর বিপরীতে মূল পরিশোধ হয়েছে ২১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রথম ত্রৈমাসিকে নিট ঋণ এসেছে ৩৩১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে নিট ঋণ বেড়েছিল ৮ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের মোট ঋণস্থিতি কমে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪১ কোটি টাকায় নেমেছে। আগের মাস আগস্ট শেষে যা ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১ কোটি টাকা ছিল।

ব্যাংকাররা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্র, ব্যাংকসহ সামগ্রিকভাবে সঞ্চয় প্রবণতা কমেছে। আগস্ট শেষে ব্যাংক খাতের আমানত মাত্র ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা হয়েছে। একই সময়ে যেখানে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি বাড়লেও ব্যাংক ঋণে ৯ শতাংশ সুদহারের সীমা অপরিবর্তিত রয়েছে। যে কারণে ব্যাংক আমানতের গড় সুদহার বাড়ছে না। গত আগস্টে আমানতের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। অথচ গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশের ওপরে।

সূত্র: সমকাল ।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top