একক জয়ে আত্মবিশ্বাসী আ’লীগ

রাজটাইমস ডেক্স | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৩৪; আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:৪৬

 ছবি : সংগৃহীত

দেশজুড়ে এখন পৌরসভা নির্বাচনের ডামাঢোল চলছে। একে একে চারটি ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। নির্বাচন নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন থাকলেও বেসরকারি ফলাফলে বেশির ভাগ পৌরসভায় মেয়র পদে জিতেছে আওয়ামী লীগ। প্রধানবিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনী মাঠে একেবারেই দাঁড়াতে পারেনি। ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে এ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২টির। এর মধ্যে ১৫৯টিতেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। পৌরসভা নির্বাচন ছাড়াও টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর সংসদীয় কয়েকটি আসনের উপনির্বাচন ও সিটি নির্বাচনের সব ক’টিতেই জয়লাভ করেছে ক্ষমতাসীনরা। নিরঙ্কুশ এ জয়ে ভোটের মাঠে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। পৌরসভার বাকি ধাপের নির্বাচনেও বড় জয়ের লক্ষ্যে কাজ করছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৪৮টিতেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা জয়লাভ করে। নির্বাচনে বিএনপি মাত্র একটি মেয়র পদে জয়লাভ করতে পেরেছে। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ২৪টি পৌরসভা নির্বাচনে ১৯টিতেই আওয়ামী লীগ জয় পায়। আর মাত্র দু’টিতে বিএনপি ও তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হন। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ৬০টি পৌরসভা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চারজনসহ আওয়ামী লীগের ৪৬ জন মেয়রপ্রার্থী জয়লাভ করেন। এ ছাড়া সরকারি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী চারজন এবং বিএনপির মাত্র চারজন এবং বিএনপির বিদ্রোহী দুইজন প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হন। তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ৬৩টি পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীরা ৪৬টিতেই জয় পান। এ নির্বাচনে মাত্র তিনটিতে মেয়র পদে জয় পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। আর ১৪টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ ঘরানার।

পরিসংখ্যান বলছে, নতুন বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ওই নির্বাচনেও সিটি মেয়রসহ ৪১টি সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১৪টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের মধ্যে ৫৪টির নির্বাচনের সব ক’টিতেই নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করে ক্ষমতাসীনরা। এর আগে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর দু’জনই বড় ব্যবধানে জয়লাভ করে। অধিকাংশ কাউন্সিলর পদেও ক্ষমতাসীন দলটির প্রার্থীরা জয়লাভ করে। এ ছাড়াও গত বছরের ২১ মার্চ ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ ও গাইবান্ধা-৩ আসনের উপনির্বাচনে, ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে, ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে এবং ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জ-১ ও ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনের সব ক’টিতেই আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থীরা জয়লাভ করে। একের পর এক জয়ের পেছনে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল দলটির প্রধান ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনেরই সুফল বলে মনে করছেন। নেতাদের মতে, বিএনপির ব্যর্থতার কারণে জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশের মানুষ এখন উন্নয়ন চায়, তারা উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সরকারের বড় অর্জন পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যাপকভিত্তিতে প্রভাব পড়ছে। পৌরসভায় নিরঙ্কুশ বিজয় প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন, অপরাজনীতির জন্য জনগণ বিএনপির কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের আস্থা শতভাগ। সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী তারই নজির।


সিটি ও পৌরসভা নির্বাচনে একের পর এক নিরঙ্কুশ জয়ের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, প্রথমত শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাযজ্ঞ, তার সততা ও সাহসিকতা, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন সঙ্কট মোকাবেলা করা সর্বোপরি মানুষ খেয়ে-পরে ভালো আছে, এসব কারণে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল। দ্বিতীয়ত বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। এগুলো নেত্রীর নির্দেশে আমরা মনিটরিং করেছি যার ফলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাস ভালো কিন্তু বেশি আত্মবিশ্বাস ভালো না। সিটি বা পৌরসভা নির্বাচন তো আমাদের মূল লক্ষ্য না। মূল লক্ষ্য হলো আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকে তৃণমূলকে সুসংগঠিত করছি এবং জনগণের আস্থা অর্জন করা। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরছি যাতে মানুষ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।

আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, জাতীয় নির্বাচন, উপনির্বাচন, সিটি নির্বাচন আর পৌরসভা নির্বাচন- যেটাই বলেন সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভালো করছে এটা গুড সাইনিং। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। এসব জয় শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনেরই সুফল। তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটি পরাজিত পার্টি, ব্যর্থ পার্টি। আর জনগণ কখনো ব্যর্থদের সাথে থাকতে চায় না। জনগণ বুঝে গেছে, এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বিএনপি আর কখনো আসতে পারবে না। যার ফলে জনগণ আওয়ামী লীগকে বেছে নিয়েছে।



বিষয়: রাজনীতি


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top