রাবিতে হল ডাইনিংয়ে খাবারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ছাত্রফ্রন্টের মানববন্ধন

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২ ০২:২৪; আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ১৩:৩৪

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হল ডাইনিংয়ে খাবারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৯জুন) বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্তরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

এ সময় বক্তারা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব শুধু ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার একটি সামগ্রিক পরিবেশ। হল, ডাইনিং, ক্যান্টিন, লাইব্রেরিসহ ক্যাম্পাসের কোন কিছুই সে পরিবেশের বাহিরে নয়। যখন শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যের দিক তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয় তখন শিক্ষার সেই পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। এমনিতেই বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই বহু অসচ্ছল শিক্ষার্থী এক বেলা না খেয়ে থাকে। বহু শিক্ষার্থী অন্নসংস্থানের চিন্তা করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলে নিয়মিত শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক। এমনকি এ বছরের এপ্রিলেই হল ডাইনিং এর খরচের বকেয়া পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ডাইনিং এর খাবারের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এ সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে বিরাজমান শিক্ষার অনুপযোগী পরিবেশকে ভয়াবহ রূপ দিবে।

তারা আরো বলেন, ২০২২ অর্থবছরে রাবিতে উন্নয়ন বাজেট এসেছে ৫১০ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ২০২১-২২ অর্থবছরে বারির পরিচালন বাজেট ছিল ৪৩৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। প্রতিবছরের এ বিপুল পরিমাণ পরিচালন বাজেটের ৭০-৭৫ ভাগ খরচ হয় শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা পেনশন খাতে। অথচ ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষার্থীর পুষ্টিকর খাবারের চাহিদা নিশ্চিতের মোট মৌলিক প্রয়োজন নিয়ে প্রশাসনের কোন তোয়াক্কা নেই। এমনকি প্রতিবছর ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যেও বহু অর্থকড়ি খরচ করা হলেও হলের ডাইনিংয়ের খাবারে এক পয়সাও ভর্তুকি দেওয়া হয়না। নিশ্চিত করা হয়না শিক্ষার্থীদের জন্যে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে করা গবেষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর হলে থাকা শিক্ষার্থীদের দৈনিক প্রাপ্ত পুষ্টির পরিমাণ গড়ে ১ হাজার ৮২১ কিলোক্যালরি। অথচ পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর দিনে গ্রহণ করা উচিত নূন্যতম ৩ হাজার কিলোক্যালরি। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে প্রতিদিন একজন শিক্ষার্থী গড়ে ১২০০ কিলোক্যালরির পুষ্টি ঘাটতিতে পড়ে। এই প্রাত্যহিক পুষ্টির ঘাটতি প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে দূর্বল করে দিচ্ছে। ফলে কমছে তাদের শিক্ষা অর্জনের সক্ষমতা। এভাবে পুষ্টির অভাবে যদি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সক্ষমতাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে তবে এতো শিক্ষক আর অবকাঠামোর আয়োজন কিসের প্রয়োজনে? প্রশাসন যদি প্রকৃতই শিক্ষার মান বৃদ্ধি নিয়ে মনযোগী হতো তবে সবার আগে শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর ও মানসম্মত নিশ্চিত করতো। কাজেই অগ্রধিকার ভিত্তিতে হল ডাইনিংয়ে ভর্তুকি দিয়ে পুষ্টিকর মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top