শীতের আগমনে রাবিতে জমে উঠেছে পিঠার আড্ডা

রাবি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২২ ০১:৪১; আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২২ ০১:৪৩

ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শীতের আমেজ। শীতের আগমনী বার্তায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রোকেয়া হলের সামনে জমে উঠেছে পিঠার আড্ডা। সন্ধ্যা হলেই সেখানে পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। তবে দোকানিরা চড়া দামে পিঠা বিক্রি করছেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, খালেদা জিয়া হলের সামনে এবং রোকেয়া হলের সামনে পিঠার দোকান বসলেও সবচেয়ে বেশি জমে উঠেছে রোকেয়া হলের সামনের দোকানগুলোতে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন রকম পিঠা পাওয়া যায় ওই দোকানগুলোতে। তার মধ্যে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, তেলের পিঠাসহ নানারকম পিঠার স্বাদ নিতে শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগেই থেকে ক্যাম্পাসের এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে। তবে এসব দোকানের পিঠার দাম ও মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। চিতই পিঠা আগে পাঁচ টাকা বিক্রি হলেও এখন বাড়িয়ে আট থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভাপা পিঠায় আট টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলের পিঠাও চড়া দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। আগে ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পিঠার সঙ্গে ভর্তার জন্যেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। প্রতি ভর্তার বাটি ১০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা।

অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের আটা ব্যবহার করেও চড়া দাম রাখছেন দোকানিরা। ফলে মান নিয়েও হতাশ শিক্ষার্থীরা। নিম্নমানের আটা ব্যবহার করার ফলে পিঠা তৈরির পর মাঝখান শক্ত থাকে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। ফলে পুরো পিঠা না খেয়ে কোনো কোনো শিক্ষার্থীকে ফেলে দিতে দেখা গেছে।

গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জিন্নাতুন নূর মুক্তা বলেন, পিঠা উৎসবে চড়া দাম রাখছেন দোকানিরা। ক্যাম্পাসের বাইরে চিতই পিঠার দাম যেখানে পাঁচ টাকা এখানে তারা রাখছেন আট টাকা। ছোট্ট একটা তেলের পিঠা ২০ টাকা করে রাখছেন। ভাপা পিঠার দামও বেশি। দামের তুলনায় খাবারের মানও খুব বাজে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রুমানা ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসের মাঠে দোকান হওয়ায় তাদের কোনো ভাড়া দিতে হচ্ছে না। তবুও চড়া দাম রাখছে কেন, সেটা আমার বোধগম্য না। বাইরের তুলনায় এখানে প্রতি পিঠায় রাখা হচ্ছে অতিরিক্ত দাম। আবার পিঠার সঙ্গে ভর্তা খেতেও দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ১০ টাকা।

লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, আমার পড়াশোনা শেষ হওয়ায় আমি ঢাকায় চাকরি করি। ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে বন্ধুদের নিয়ে পিঠা খেতে আসলাম। এসে দেখি পিঠা তৈরির অবস্থা খুব বাজে। পিঠার দাম রাখা হচ্ছে বেশি এবং দামের তুলনায় মান একেবারে নিম্নমানের।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা নাজনিন কেয়া বলেন, গতবছর যেখানে পিঠার দাম ছিল অনেক কম। এবছর তার দিগুণ করা হয়েছে। চিতই পিঠায় চিনি তেল লাগছে না তবুও তারা আট টাকা করে বিক্রি করছেন। ভাপা পিঠা বাইরে যেখানে ৫-১০ টাকা সেখানে ক্যাম্পাসে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। আমরা প্রশাসনে সুনজর চাই।

এসব বিষয় জানতে চাইলে এক পিঠা বিক্রেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাই পিঠার দাম আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে। পিঠার মধ্যে বিভিন্ন উপাদান দেওয়ায় তাদের খরচ বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, লাকড়ির দাম অনেকাংশে বেড়েছে যার কারণে সবরকম পিঠায় আগের থেকে দাম বাড়ানো হয়েছে।

খাবারের মানের বিষয় জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পিঠা খাওয়াতে। মাঝে মাঝে খারাপ হয়ে যায় তবুও চেষ্টা করি ভালো করতে।

এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান হলের পরিবেশ নষ্ট করছে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, পশ্চিমপাড়ার পিঠার দোকান ও পিঠার মান নিয়ে আমরা শঙ্কিত। শিক্ষার্থীরা ওখানে কী না কী খাচ্ছে তার জন্য আমরা নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা করছি।

তিনি বলেন, সহকারী প্রক্টররা এসব বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ নেন। তবে আমি হল প্রাধ্যক্ষদের এসব দোকানের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কারণ এগুলোর মাধ্যমে হলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রুত দোকানগুলো তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।

#এনএ



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top