ইবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন: ৪ ঘণ্টা জেরার ‍মুখে দুই ছাত্রলীগ নেত্রী

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫১; আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ০২:১৪

ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা অন্তরা চৌধুরী ও তাবাসসুম ইসলামের বয়ান শুনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন তারা। এরপর প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডলের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রায় চার ঘণ্টায় দুই দফায় তারা লিখিত ও মৌখিক বয়ান দিয়েছেন। এ সময় তদন্ত কমিটির সদস্য, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা, সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. মুরশিদ আলম, সদস্য সচিব আলীবদ্দীন খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা অন্তরা চৌধুরী জানান, তদন্ত চলছে। তাই এ মুহূর্তে কিছুই বলতে চাচ্ছি না। তদন্ত কমিটির সঙ্গে আমার একবার কথা হয়েছে। তারপর আমার থেকে সাক্ষরকৃত চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য নিয়েছেন।

হলে ভয়ার্ত পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্তের মাধ্যমেই আপনারা এসব জানতে পারবেন। তদন্তের রিপোর্টে যা আসবে সেটাই সত্যি।

ছাত্রলীগ না করেই কমিটিতে পদ পেয়েছেন, মিছিল মিটিং এ দেখা যায়নি, এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কমিটিতে আসা বা না আসা এগুলোতে আমার মন্তব্য করার কথা না। আপনারা বড়দের সঙ্গে কথা বললে এই বিষয়ে জানতে পারবেন। নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘নো কমেন্ট।’

অভিযুক্ত তাবাসসুম বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমি কিছুই বলছি না। সবকিছু আমি তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছি। রিপোর্ট জমা দিলে আপনারা সব জানতে পারবেন।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডল বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সাক্ষ্য নিয়েছি বা নিচ্ছি। তদন্তে কি পেলাম আপাতত তা জনসম্মুখে বলা যাবে না। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে অনেক কাজ করে ফেলেছি।’

নতুন অভিযুক্তদের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো তদন্ত চলছে। কে অভিযুক্ত সেটি তদন্ত শেষেই বলতে পারবো। এখন এটি তদন্তের যথার্থতার জন্য আমরা বলতে পারছি না।

হলের সিসিটিভি ফুটেজ না থাকা নিয়ে প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডল জানান, ওখানের প্রভোস্ট মহোদয়কে আমরা বলেছি যে, আপনারা সিসিটিভির ফুটেজ আমাদের কাছে সরবরাহ করেন। ওনারা তা এখনো দিতে পারেনি।

সিসিটিভির কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব আমরা জানি না। আমরা শুধু সিসিটিভির ফুটেজ চেয়েছি। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টায় আছি।

এদিকে, একটি সূত্র জানিয়েছে, এদিন মূল অভিযুক্ত সানজিদা অন্তরা চৌধুরী ও তাবাসসুম ইসলাম বাদেও পিঙ্কি শেখ, মোয়াবিয়া জাহান, উর্মি ও মিম নামের চার জন শিক্ষার্থীর বয়ান নেওয়া হয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে এরা সরাসরি জড়িত কিনা তা ঐ সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি। এছাড়া একাধিক সাক্ষীর থেকেও বয়ান নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্য ও সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. মুরশিদ আলম বলেন, অভিযুক্তদের বক্তব্য নিয়েছি। এগুলো ক্রসচেক করতে হবে। অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগীকে সামনাসামনি করে বক্তব্য শোনার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমরা ভাবছি। ইতিমধ্যে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

ইবিতে ছাত্রী র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক। কমিটি করার পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম দৈনিক ইত্তেফাককে এ সব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এখন তারা তাদের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

তিনি আরও বলেন, কমিটিতে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবু জর গিফারী, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলমের নাম রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top