চারদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা
রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২৪ ১৮:৫২; আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ২৩:০০

আওয়ামী লীগের সকল ষড়যন্ত্রকে চিরতরে রুখে দিতে কেন্দ্রের সাথে সমন্বয় করে চার দফা দাবিসহ সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ এর অংশ হিসেবে 'রোডমার্চ' কর্মসূচি করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) নগরীর তালাইমারি মোড় এলাকায় বিকেল ৩টায় জমায়েত হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে আন্দোলনে শহিদ হওয়ার স্থান তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকা গিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন তারা। সেখান থেকে রাজশাহীর শাহ মখদুম কলেজের সামনে গিয়ে শহীদের স্বরণে দোয়া মোনাজাত করেন।
এসময় 'তোমার আমার জান নিতে, খুনি এখন দিল্লিতে', 'বিচার বিচার বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই', 'ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই', 'লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই', 'ভারতের দালালরা, হুশিয়ার সাবধান','হৈহৈ রৈরৈ শেখ হাসিনা গেলি কই', 'জালোরে জালো, আগুন জালো', 'হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই','খেলা খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে' এসময় এমনসব স্লোগান দিতে থাকেন।
সেখানে তারা চার দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো-
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
২. সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নূতন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ মেশকাত চৌধুরী বলেন, আমরা গণভবনে থেকে শেখ হাসিনাকে বিদায় করতে পেরেছি কিন্তু বাংলার গ্রামে গঞ্জে, পড়া-মহল্লায়, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে একেকটি শেখ হাসিনা রয়ে গেছে। তারা এখনো আমাদের রক্ত ঝাড়াবে, রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতায় আসবে তাহলে আপনারা কি ঘরে ফিরে যাবেন। আমরা তাদের প্রতিহত করবো। গত ৫৩ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেউ কখনো বাস্তবায়ন করতে পারিনি বরং বার-বার বেইমানি করা হয়েছে। আমাদের আগস্টের বিল্পব এখন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বে যেখানে যেখানে ফাঁসিবাদ এবং স্বৈরাচার জন্ম নিবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভিজ্ঞতা তারা কাজে লাগিয়ে সেই স্বৈরাচারের মসনদ থেকে টেনে নামাবে।
আরেক সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ছাত্র-আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানকে মনে প্রাণে ধারণ করে সেই বিপ্লবকে রক্ষা করার জন্য আমরা এখনো মাঠে আছি। যতদিন পর্যন্ত এ বিপ্লবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলবে ততোদিন পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব। আজকে আওয়ামী লীগের দোসররা আমাদের বিপ্লবের বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা আবু সাইদ এবং মুগ্ধ থেকে প্রেরণা নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রোধ করে আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও শিক্ষকরাও এ আন্দোলনে অংশ নেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: