শেষ কর্মদিবসেও বিতর্কিত, শতাধিক নিয়োগ
কে এ এম সাকিব, রাবি | প্রকাশিত: ৬ মে ২০২১ ২৩:০৯; আপডেট: ৭ মে ২০২১ ১৮:২০
-2021-05-06-17-10-55.jpg)
শেষ দিনেও বিতর্কিত হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এম আবদুস সোবহান। ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে ১৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।
যাওয়ার আগে অ্যাডহকে শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাক্ষরিত একটি তালিকা রাজটাইমস এর হাতে এসেছে।
উপাচার্য স্বাক্ষরিত ওই নিয়োগ তালিকায় ৮৫ জন উচ্চমান সহকারী, ১১ শিক্ষক ও ইমামসহ বেশ কয়েকজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীসহ ৪৭ জনের নাম রয়েছে। উপাচার্য ভবনে গিয়ে দেখা যায়, চাকরিতে যোগদানের চিঠিতে স্বাক্ষর করছেন চাকরিতে নতুন যোগদান করা ব্যক্তিরা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল-দপ্তরে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য।
ইস্যুকৃত নিয়োগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষর করেননি। তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।
অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এখন অজ্ঞাতবাসে (অজ্ঞাত জায়গায় নিজেকে আড়াল করে রেখেছি) আছি। আমার পরিবারও জানে না কোথায় আছি। কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে থাকব না বলেই অজ্ঞাতবাসে আছি।’
নিয়োগপত্রে ইউসুফ আলী নামের একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর রয়েছে বলে জানা গেছে।
দূর্নীতিবিরোধী শিক্ষকদের প্রতিবাদ ও নানা সমালোচনার মুখে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, মোট ২৫৭ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ মে) দুপুর ০২.৩০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ত্যাগ করেন তিনি।
ক্যাম্পাসের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখে নানা অভিযোগ আর বিতর্কের বোঝা মাথায় নিয়ে চার বছর দায়িত্ব পালন শেষে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
ক্যাম্পাস ছাড়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, আপনারা ভালো থাকবেন। ভিসি থাকাকালীন আপনারা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ্যাডহকে নিয়োগের বিষয়ে তিনি কেন মন্তব্য করেননি,শুধু বললেন আপনারা ভালো থাকবেন দোয়া করবেন।
এরপূর্বে, গত ২মে (রবিবার)সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্য ভবনে ফাইনান্স কমিটির সভা শুরুর আগেই সকাল সাড়ে ৮টায় ভবনের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে আজকের সভায় আরও বড় ধরনের ‘অনিয়ম’ করবে এমন আশঙ্কায় মিটিং স্থগিতের দাবিতে সিনেট ও দুটি প্রশাসন তালা লাগিয়ে রাখে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতা-কর্মীরা।
পরবর্তীতে গত ৪ মে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়। উপাচার্য সিন্ডিকেট সভায় পছন্দের প্রার্থীদের অ্যাডহকে চাকরি দিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন এমন অভিযোগে সভা বন্ধের দাবিতে বাসভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকরা।
সেখানে সকাল থেকে চাকরিপ্রত্যাশী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা অবস্থান নেন এবং ভিসির বাস ভবন ঘেরাও করে রাখে চাকরী প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা। সে মুহূর্তে সিন্ডিকেট সভায় ‘অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হবে’ এমন অভিযোগে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে শিক্ষকদের সাথে আগে থেকে অবস্থান নেয়া চাকরী প্রত্যাশী ছাত্রলীগের ধাক্কাধাক্কি ঘটে। একপর্যায়ে শিক্ষকরা জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতারা শিক্ষকদের লাঞ্চিত করেন।
- এসএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: