বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পেশ ইমাম নিয়োগেও দূর্নীতি বিদায়ী ভিসির

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১ ১৯:৪৭; আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ১৯:৫৫

ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের 'দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজে'র ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দেয়া রাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের এই অভিযোগ তোলেন তারা। 

গত ৪ অক্টোবর ইউজিসিতে দেয়া তথ্য প্রমাণে এই অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক সোলায়মার চৌধুরী। 

তথ্য প্রমাণের সেই পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম নাসির উদ্দিনের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তার ছেলে ফাহিম মহমুদকে ২৬-০৬-২০১৮ তারিখের ৬ এ-লুজ/সশা/২৪৩৮  (১২) নং আদেশে কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম পদে মাসিক ১১ হাজার ৩০০ টাকা
হিসাবে বেতন ও অনান্য ভাতাদিসহ ৬ মাসের জন্য এডহক নিয়ােগ দেয়া হয়।

এই সিদ্ধান্ত ১৬-০৮-২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত ৪৮২তম সিন্ডিকেটে (৬৩নং) রিপাের্ট করা হয়। একই সিন্ডিকেটে (৬৫নং) রিপাের্ট করা হয় যে, ০৩-০৭-২০১৮ তারিখের ১৮৭৯/১৮/১২-২২৪২/সশা নং আদেশে সদ্য নিয়ােগপ্রাপ্ত সহকারী পেশ ইমাম ফাহিম মাহমুদকে কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। উদেশ্যমূলকভাবে একজন এডহক নিয়োগপ্রাপ্ত ইমামকে একই সাথে মসজিদের উপদেষ্টা কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব ও মসজিদ কমিটির সভাপতির সাথে যৌথভাবে হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ৫-১২-২০১৮ তারিখে, বিজ্ঞপ্তি নং-১৩/২০১৮ মােতাবেক কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম পদে নিয়ােগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিজ্ঞ প্রার্থীদের বাদ দেয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়সসীমা অনুর্ধ্ব ৩৫ উল্লেখ করা হয়। 

উল্লেখ্য, উপাচার্য আব্দুস সােবহান ২২০০০-৫৩০৬০ স্কেলে অফিসার নিয়ােগের শর্তাবলী থেকে আবেদনকারীর বয়সসীমা উঠিয়ে দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম পদে ১১ জন প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীদের মধ্যে তুলনামূলক যােগ্য, অভিজ্ঞ প্রার্থীদেরকে বাদ দিয়ে ২৯ জুন, ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ৪৯১তম সিন্ডিকেটের ৩৫নং সিদ্ধান্তে ফাহিম মাহমুদকে কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম পদে স্থায়ী ভিত্তিতে নিয়ােগ দেন রাবি উপাচার্য।

উল্লেখ্য, সিন্ডিকেটের দিন সকালে উপাচার্য এই নিয়ােগ সভা করেন। এছাড়া নিয়োগ পাওয়া ফাহিম মাহমুদ ২০০৯-১০ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বিএসএস(অনার্স) ও মাস্টার্স করলেও আবেদনে তিনি এই বিষয়টি উল্লেখ করেননি। কারণ একই সেশনে তিনি ফাযিল ও কামিল ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। নিয়মানুযায়ী একই ব্যাক্তি একই সাথে দুটি বিষয়ে ডিগ্রি পেতে পারেন না। তথ্য গােপন করে পেশ ইমাম পদে আবেদন নৈতিক স্খলন ও একটি গুরুতর অপরাধ।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই আবেদনকারী এই জালিয়াতি করেছিলেন। উপাচার্য সব কিছু জানার পরও অনিয়ম করে ফাহিম মাহমুদকে নিয়োগ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে তথ্য প্রমাণ সরবরাহকারী সহকারী অধ্যাপক সোলায়মান চৌধুরী বলেন, আমরা যখন ইউজিসিতে অভিযোগগুলো দিয়েছিলাম তখন সব অভিযোগের প্রমাণ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে যখন ইউজিসিতে শুনানি হয়, সেখানে আমি সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলাম। এবং সে সাক্ষ্য দেয়ার পরে গত ৪ অক্টোবর কতগুলো অভিযোগের প্রমাণ সেখানে জমা দিয়েছি। (বাংলাদেশ প্রতিদিন)

 

  • এসএইচ 


বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top