৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পদার্পণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২১ ১৮:১১; আপডেট: ৬ জুলাই ২০২১ ১৮:১১

রাজটাইমস ডেস্ক

একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় সময় হলো ১৮-২৫ বছর বয়স এবং তার জীবনের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানের একটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। মানুষ ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতে দেখতে একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসে এবং সেখান থেকে বের হয়ে সারা জীবনটা পাড়ি দেয় সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিটুকু বুকে নিয়েই। মাঝের এই ক্যাম্পাস-জীবনটুকু একজন মানুষকে যত দ্রুত পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত, মননশীল, উদারমনা ও শিক্ষিত করে তুলতে পারে, বাকী জীবনটা সেই পরিমাণ দ্রুততার সাথে তার চিন্তাজগৎকে ঠিক এতটা প্রভাবিত করতে পারে কিনা তার সন্দেহ থেকেই যায়৷ এখানকার বই, খাতা, শীট, কিংবা ক্লাস লেকচারই শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর চিন্তায় পরিবর্তন আনেনা বরং এর প্রতিটি ইট-বালুকণা, তরু-বৃক্ষ, আলো-বাতাস, উদ্যান-ভাস্কর্য, দোকান-পাট, মানুষজন, সংস্কৃতি, সভা, র্যালি, সংগঠন, ছাত্র-শিক্ষক প্রত্যেকেই একজন শিক্ষার্থীর চিন্তার জগতে তুলে দিতে পারে তুমুল ঝড়। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মনস্তাত্ত্বিক, জৈবিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রই মুখরিত হয় তার অবাধ পদচারণায়। হ্যাঁ, আজ সেই আদর্শ জাতি গঠনের কারিগর- দেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীন ঐতিহাসিক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের ও আনন্দের দিন। আজ হাজার হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকেই আমাদের এই পূর্ববঙ্গ শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে ছিল। ব্রিটিশদের একচোখা নীতির ফলে শিক্ষাব্যবস্থা অনেকটা কলকাতাকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের এই অঞ্চলে দারিদ্র্য এবং কুসংস্কার ভয়ংকরভাবে জেঁকে বসেছিল। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এবং অবহেলিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি ওঠে। এবং সেই মোতাবেক ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর দেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি নবজাগরণ ঘটে। এদিকে বহু পূর্ব থেকেই উত্তরবঙ্গ অবহেলিত হয়ে আসছিল। তাই এই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষকে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়ে উত্তরবঙ্গের প্রধান শহর রাজশাহীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি উত্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রাজশাহীতে স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু হয়। পরিক্রমায় ১৯৫০ সালে ১৫ নভেম্বর রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয় এবং ১৯৫২ সালে প্রথমবারের মতো শহরের ভুবনমোহন পার্কে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর আন্দোলনের পর পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য আইনজীবী মাদারবখ্শের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. ইতরাত হোসেন জুবেরীকে প্রথম উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

১৯৫৩ সালের এই দিনেই সাতটি বিভাগে মাত্র ১৫৬ জন ছাত্র এবং পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে একাডেমিক যাত্রা শুরু করে উত্তরাঞ্চলের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ। পদ্মাতীরের বড়কুঠি নামে পরিচিত ঐতিহাসিক রেশমকুঠি ও উত্তরবঙ্গের আরেক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ড. সোয়ানিটমাসের পরিকল্পনায় মতিহারের নয়নাভিরাম সবুজ চত্বরে ক্যাম্পাসের গোড়াপত্তন হয়। রাজশাহী শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত এই ক্যাম্পাসটি ৭৫৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। হাঁটি হাঁটি পা পা করে অবশেষে গৌরব আর ঐতিহ্যের ৬৮ বছর পূর্ণ করে আজ ৬ জুলাই ৬৯ বছরে পা দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভাষা আন্দোলনের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হওয়ায় এই আন্দোলনের যে মৌলিক চেতনা তা প্রতিষ্ঠানটিতে বিদ্যমান। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে শহীদ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা। যিনি দেশের ইতিহাসে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। এতেই বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।

বাঙালি জাতির জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতায়ও রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অসামান্য অবদান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সচেতন ছাত্ররা জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। পাকিস্তানি শাসকরা পরাজয় নিশ্চিত জেনে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার যে নীলনকশা এঁকেছিল তাতে জীবন দিতে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হবিবুর রহমান, অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার, অধ্যাপক মীর আবদুল কাইয়ূমসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে। এনারা ছাড়াও ত্রিশ ছাত্র, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শহীদ হন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ অসংখ্য আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১১টি অনুষদের ৫৯টি বিভাগ এবং সাতটি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এখানে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ১২৫০ জন, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় ২৬০০ এবং আবাসিক হল রয়েছে ১৭টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ৬৮ বছরে জড়িত ছিলেন দেশবরেণ্য অনেক ব্যক্তি। এখানে শিক্ষকতা করেছেন জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ভাষাবিজ্ঞানী ড. এনামুল হক, বিজ্ঞানী পিটার বার্টচি, প্রফেসর ড. এমএ বারী, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, প্রফেসর হাসান আজিজুল হক, প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা, প্রফেসর অরুণ কুমার বসাক, তাত্ত্বিক ও সমালোচক প্রফেসর বদরুদ্দিন উমরের মতো সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। দীর্ঘ এ সময়ে রাবি তৈরি করেছে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ইতিহাসবিদ আব্দুল করিম, ইতিহাসবিদ ড. আবুল কাশেম, চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম, নাট্যকার মলয় ভৌমিক, মাসুম রেজা, প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী অ্যান্ড্রু কিশোর, সাবেক উপাচার্য ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. সাইদুর রহমান খান ও জাতীয় ক্রিকেটার আল আমিন হোসেনদের মতো অসংখ্য গুণীজন। আবার এখানকার রাকসু বা ছাত্ররাজনীতির অনেক দিকপাল এখন দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন পদে সুনামের সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন ও করছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অসামান্য দৃষ্টিনন্দন একটি ক্যাম্পাস। প্যারিস রোডের নান্দনিক সৌন্দর্য এবং এর দু’পাশ দিয়ে আকাশছোঁয়া গগনশিরিষ গাছগুলোর সৌন্দর্য-পিপাসুকে মোহিত করে রাখার ক্ষমতা আশ্চর্য। এই প্যারিস রোডে এত বছর ধরে কত শত স্মৃতিই না রচিত হয়েছে! প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করেই হাতের বামদিকে পড়ে সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, এরপর রয়েছে শিল্পী নিতুন কুণ্ডুর অসামান্য সৃষ্টি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহক সাবাস বাংলাদেশ ভাস্কর্য, প্রশাসন ভবনের সামনেই ড. শামসুজ্জোহার সমাধি। প্রশাসন ভবনটিও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এর অনতিদূরেই রয়েছে শহীদ মিনার চত্ত্বর এবং মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন সংগ্রহের জন্য ‘শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা’। পড়াশোনা এবং গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ প্রদান করার জন্য রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম, সুইমিং পুল এবং ইনডোর গেমসের জন্য ইনডোর স্টেডিয়াম। শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করার জন্য প্রতিটি বিভাগে সেমিনার লাইব্রেরির পাশাপাশি রয়েছে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিচরণের জন্য প্রায় চার লাখ বই সংবলিত একটি আধুনিক গ্রন্থাগার। টুকিটাকি চত্ত্বর, জুবেরী মাঠ, ইবলিশ চত্ত্বর, বধ্যভূমি, শিক্ষকদের কোয়ার্টার, কাজলা গেট, বিনোদপুর বাজার, স্টেশন চত্ত্বর, পশ্চিম পাড়া - এগুলো যেন প্রত্যেকের হৃদয়ের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে। বর্তমান সময়েও দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা স্বচ্ছন্দ্যে পদচারণা করে চলেছেন।

শিক্ষা, গবেষণা, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ এবং আদর্শ মানুষ হিসেবে আমাদের গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। একটা সময় সদা-সর্বদা অস্থিতিশীল অবস্থা, নানা প্রতিকূলতা, বাধা-বিপত্তি ও বন্ধুর পথ পাড়ি দিলেও বর্তমান সময়ে এসে জ্ঞান, গবেষণা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনার চেষ্টার মাধ্যমে প্রাণের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা ও আধুনিক ক্যাম্পাস নির্মাণের পেছনে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাজেট ঘোষণা করা হয় না। শীঘ্রই এই সংকট দুর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা গবেষণা ক্ষেত্রে যাতে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন সেদিকে সচেষ্ট হওয়া উচিত। এতো বড় একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব যাতে যোগ্য ব্যক্তির নিকটই হস্তান্তরিত হয় এটাই বিশ্ববিদ্যালয়টির আপামর শিক্ষার্থীর প্রত্যাশা। তারা বিশ্বাস করে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একদিন তার গৌরবময় পদচারণার মাধ্যমে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে।

২০১৯ সালে বিজ্ঞান গবেষণার ভিত্তিতে সিমাগো-স্কপাসের জরিপে দেশের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম অবস্থান দখল করেছিল। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রমের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোর এ্যালামনাইরাও তাঁদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে জ্যোতি ছড়াচ্ছেন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পশ্চাৎপদতা কাটিয়ে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করার পেছনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। নগরকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে প্রান্তীয় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় দেশের দায়িত্বশীল অনেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়কে তেমন একটা মূল্যায়ন করতে চান না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনাময় এ্যালামনাইদের বৃহৎ প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করতে না পারাটাও সাময়িকভাবে একটা চ্যালেঞ্জ।

অন্যান্য বছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, সব আবাসিক হল, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে শোভা পায় রঙ-বেরঙের আলোকসজ্জা, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে সাজানো হয় নানা রকম আল্পনা দিয়ে। তবে এবারে সেই আয়োজন করোনা পরিস্থিতি ও কঠোর লকডাউনজনিত কারণে থাকছে না। করোনার কারণে একেবারেই ‘সীমিত পরিসরে’ উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। জন্মদিনের কেককাটার মতো আয়োজনও থাকছে না এবার।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশাল আকার ধারণ করায় বড় ধরনের কর্মসূচি পালনে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হওয়ায় দিবসটি উদযাপনের আয়োজন হচ্ছে না।

জীবন, সময়, রাষ্ট্র, সমাজব্যবস্থা, বিশ্ব - সবই এগিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও যাতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে এবং প্রতিটা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিজের ঝুলিতে সুন্দর সুন্দর প্রাপ্তি যোগ করতে পারে সেদিকে নজর রেখে প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের প্রত্যেককেই সজাগ সচেতন থাকতে হবে। আমরা আশা করছি যে দেশের বৃহৎ, প্রাচীন, নান্দনিক ও অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমরা গৌরবের সাথে একে একে প্লাটিনাম ও শতবর্ষ জয়ন্তী উদযাপন করবো। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোর দিশারী হোক!

 

নিশাত তাসনিম আর্নিকা
২য় বর্ষ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top