শাবিপ্রবির ঘটনায় রাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের অবস্থান কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ০৫:৪১; আপডেট: ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ০৫:৪৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবি চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচী।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির সমর্থনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, আমাদের লজ্জা লাগে, আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার করেছি। এমন সময়ে এসেও শিক্ষার্থীরা শোষিত, লাঞ্চিত এবং হামলার শিকার হচ্ছে। শাবিপ্রবিতে অহিংস ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানো হলো, মারপিট করা হলো। ছাত্ররা সেখানে গিয়েছিল প্রভোস্টকে পদত্যাগ করানোর জন্য। কিন্তু সেটি এখন ভিসি পদত্যাগ আন্দোলনে রুপান্তরিত হয়েছে। কেনো এই আন্দোলনে রুপান্তরিত হলো সেই প্রশ্নটি জানা খুবই দরকার।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা ১৪০ ঘন্টা ধরে আমরন অনশন করছে। যেকোন মুহুর্তে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমরা সেই বিষয়গুলো খেয়াল করছি না। আমরা শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য আন্দোলনের মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজছি, তৃতীয় পক্ষ খুঁজছি। আমাদের ত্রিশজন শিক্ষার্থী সেখানে মৃত্যুর সাথে লড়ছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভিসির বিরুদ্ধে কথা বলছে। বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না থাকলে শিক্ষকের কোন মূল্য থাকে না। শুধু ভিসির পদত্যাগেই এটার সমাধান হবে কিনা জানিনা। কিন্তু এটার সমাধান করা জরুরী।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শাবি উপাচার্যের পদত্যাগই এই আন্দোলন থামানোর একটা নির্বিকল্প পথ হয়ে আছে। এছাড়া এই আন্দোলন থামানো যাবে না। এটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। এটা সরকারের ও প্রশাসনের ব্যর্থতা। শিক্ষার্থীদের অনশন ১৪০ ঘন্টা পার হলেও শিক্ষার্থীদের খোঁজ না নিয়ে তৃতীয় পক্ষকে খোঁজা হচ্ছে, কে ইন্ধন দিচ্ছে, কোথা থেকে টাকা আসছে সেটার একটা ফানি গেইম খোজার চেষ্টা করছে সরকার।

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমি আমার নৈতিক অবস্থান থেকে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। এখন যেকোন ঘটনা ঘটলে আমরা সেটিকে ষড়যন্ত্র ও তৃতীয় পক্ষ বলে চালিয়ে দিই। শিক্ষার্থীরা যে দাবি নিয়ে সেখানে গিয়েছিল তার সুন্দর একটি সমাধান হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সেটি না হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হলো। এই ঘটনা এই পরিস্থিতি পর্যন্ত আসার কথা নয়। যারা অন্যায় আচরণ করেছে তারা পার পেয়ে যায় তাহলে অন্যায় আচরণ করার একটি শক্তি নতুন করে জেগে উঠবে। এটা শুধু শাবিপ্রবির ঘটনা নয়, এটি দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা। আমাদের শিক্ষার্থীরা কি মানুষের মতো অধিকার নিয়ে বাঁচবে, তারা কি কথা বলতে পারব, তারা কি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা করতে পারবে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আজকের চলমান ঘটনার ফয়সালার ওপর নির্ভর করছে।

এছাড়াও অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

এসময় রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তরের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাকিলা খাতুন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক রিদম শাহরিয়ার, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন, ছাত্র অধিকার পরিষদের আমান উল্লাহ আমান, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রঞ্জু হাসান।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top