রাবিতে ছাত্রদলের উপর ছাত্রলীগের হামলা

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২২ ০৬:০৯; আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৬:১৪

আহত ছাত্রদল নেতাদের মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্রলীগ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক এম এ তাহের ও আহবায়ক সদস্য জাকির রেদোয়ান আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ভর্তি আছেন। রোববার (২৩ মে) বিকাল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরের পিছনে ছাত্রদলের দলীয় ট্রেন্টে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ কটূক্তি ও পরোক্ষভাবে মৃত্যুর হুমকি এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের উপর পুলিশি হামলা-মামলা এবং ছাত্রদল নেতা জাসামকে গুম করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে গেলে তাদেরকে দেখা মাত্রই লাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে যুগ্ম আহবায়ক এম এ তাহের ও আহবায়ক সদস্য জাকির রেদওয়ান আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ৫ নং ওয়ার্ডে ভর্তি আছে।

আহত রাবি শাখার যুগ্ম-আহবায়ক এম এ তাহেরের কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ক্লাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরের পিছনে ছাত্রদলের দলীয় ট্রেন্টে বসে পেয়ারা ভর্তা খাচ্ছি। এসময় বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাবিরুজ্জাম রুহুল, শাকিলসহ নাম না জানা দশ বারোজন নেতাকর্মী আমাদের কাছে এসে বলতে থাকে, তোরা নিষিদ্ধ সংগঠন তোরা ক্যাম্পাস কি করিস বলেই আমাদের উপর হামলা চালায় এবং আমরা হেঁটে হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে চলে আসলে তারা আবার আমাদের কাছে আসে এবং হেটে যাচ্ছিস কেন? ক্যাম্পাস থেকে দৌড়ে পালা বলে আবার মারধর শুরু করে।

হামলার বিষয়ে ছাত্রদলের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে এবং এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন দুইজন। তারা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুলতান আহমেদ রাহী আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা এই সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। আর এই হামলার ঘটনায় আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচির বিষয়ে পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে।’

অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাবিরুজ্জামান রুহুল জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলাম। এসময় ছাত্রদলে কয়েকজন নেতা ক্যাম্পাসের পরিবেশ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিলো এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছিলো। এজন্য আমরা চেয়েছি যেনো কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয় সেই জন্য আমরা তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছি।

তবে তিনি মারধরের ঘটনাকে অস্বীকার করছেন। কোনো রকম মারধরের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জাগো নিউজকে জানান।


বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যে কটুক্তিমূলক কথা বলেছেন তার পরিপেক্ষিতে আজ আমরা বিক্ষোভ মিছিল করি। এদিকে ছাত্রদলের কোনো নেতা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার জন্য পরিকল্পনা করছিলেন। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তাদেরকে ধরে এবং ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করে বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোনো শিক্ষার্থী কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলার এখতিয়ার রাখেনা। এ ঘটনার পিছনে আসল প্রেক্ষাপট আমি জানি তবে আমরা তদন্ত করে দেখছি বলে তিনি জানান।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top