দুই বছর পর জমজমাট রাজশাহীর ইফতার বাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২২ ০১:৪৯; আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০২

করোনার কারণে গতদুই বছর স্থবিরতার পর এবার জমে উঠেছে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানের ইফতার বাজার। তবে এবার ইফতার সামগ্রীর দাম বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। বিক্রেতাদের দাবি করছেন মাংস, তেলসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়েছে অনেক বেশি। একারণে স্বাভাবিকভাবেই ইফতারির দাম রাখতে হচ্ছে বেশি।
গত রোববার থেকে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম সিয়াম পালিত হয়। এই দিন থেকেই রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজারসহ, অলিগলি, অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয় জমে উঠেছে ইফতার আয়োজন। গত দুই বছর করোনা সংক্রমণের কারণে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকান বসা নিয়ে সীমাবদ্ধতা ছিল। এবছর সে সীমাবদ্ধতা না থাকায় সব জায়গায় ইফতার আয়োজন ঘিরে তৈরি হয়েছে অন্যরকম এক উৎসবের আমেজ।
সোমবার বিকেলে রাজশাহীর সাহেব বাজার, লক্ষিপুর, নিউমার্কেট, শিরোইল স্টেশন বাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিয়মিত হোটেল-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি বসেছে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকানও। সেসব দোকানে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ডিম চপ, দই বড়া, ডাবলির ঘুঘনি, মিষ্টি, শাহী হালিম, গরু-মুরগি-খাসির হালিম, কাবাব, সবজি পাকোড়া, মাংসের চপের পাশাপাশি অনেকে তাদের নিজস্ব বিশেষ আয়োজন নিয়ে বসেছেন। যার মধ্যে রয়েছে কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি কাবাব, গ্রিল চিকেন, বুন্দিয়া, গরুর কালো ভুনা, কাচ্চি, চিংড়ি বল, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন বটি কবাব, দই চিড়া। রয়েে বেলের শরবত, তরমুজের শরবতসহ বিভিন্ন পানীয়র আয়োজন।
দোকানদাররা জানান, ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচশত টাকা মূল্যের ইফতার প্যাকেজে রাখা হয়েছে। তবে আইটেম ভেদে তা কম-বেশী হতে পারে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হতে দেখা যায় কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, আপেল, আঙ্গুর, লেবু, শশা, ধনিয়াপাতা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের খেজুর। ইফতারে খেজুর ও ফলের চাহিদা বেশি থাকায় এসব দোকানে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে।
নগরীর সাহেব বাজারের এক ক্ষুদ্র ইফতার বিক্রেতা জানান, সম্প্রতি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে ইফতার আয়োজনেও। বেশি দামের ইফতার চলছে খুব কম। আলুর চপ, ছোলা বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, বুন্দিয়ার চাহিদাই বেশি। কাঁচামালের দাম বাড়ায় রেশমি জিলাপির দামও গতবারের তুলনায় বাড়াতে হয়েছে।
রোজার প্রথম দিনে ফলের প্রতিও মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তরমুজ, মালটা, কলা, আপেলের চাহিদা ছিল বেশি। আপেল, মালটার দাম অন্যান্য সময়ের মতো থাকলেও তরমুজ এবং কলার দামে আগের তুলনায় অনেক বেশি। ছোট আকৃতির তরমুজ কিনতেও লাগছে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা। বড় আকৃতির তরমুজে বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন পাঁচশ-ছয়শ টাকা। রোজার প্রথম দিনেই তরমুজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রী করছেন বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের গলাকাটা মুনাফা অর্জনকে পবিত্র রমজানের শিক্ষার পরিপন্থি বলে প্রশাসনের নজরদারী কামনা করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: