চামড়া নিয়ে বেকায়দায় সংশ্লিষ্টরা

রাজশাহীতে গরুর চামড়া ২-৩শ’ টাকা ছাগল ১০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৪:১০; আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৪:২৯

কোরবানীর দিন রাজশাহী স্টেডিয়ামের পাশের আড়তে জমা হওয়া চামড়া

রাজশাহীতে কোরবানির ঈদে এবার গরু-খাসির চামড়ার নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ে এতিম-দুস্থদের প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে অধিকাংশ কোরবানি দাতাগণ পশুর চামড়া সরাসরি দান করেছেন মাদ্রাসা বা এতিমখানায়। আবার অনেকে প্রকৃত দাম না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে পদ্মা নদীতে খাসির চামড়া ফেলে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এবার রাজশাহীতে প্রতি পিস গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে দুই থেকে তিনশ টাকা আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা দরে। তথ্যমতে, রাজশাহীতে এবার সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। প্রত্যাশিত দামে নিজেরা বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই চামড়া সরাসরি দান করেছেন মাদ্রাসা অথবা এতিমখানায়। আবার এসব চামড়া নিয়েও বিপাকে পড়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। অভিযোগ রয়েছে, মূলধন বকেয়ার অজুহাত দেখিয়ে অধিক মুনাফার আশায় বড় আড়তদারদের সিন্ডিকেট বাজার নিম্নমুখী করে রাখে। যদিও আড়তদাররা দায়ী করছেন ট্যানারি মালিকদের।

ঈদের দিন রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চামড়া ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামও দিতে চাইছিলেন না। চামড়া দেখে তারা নিজেরা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছিলেন। ক্রেতা-বিক্রেতার কোনও দরকষাকষি দেখা যায়নি। একরকম নিজেদের নির্ধারণ করে দেওয়া দামেই চামড়া কিনছিলেন ব্যবসায়ীরা। চামড়া নিতে তাদের খুব একটা আগ্রহও দেখা যায়নি। মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়া ৫০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনতে দেখা গেছে। আর বড় আকারের গরুর চামড়ার দাম দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম দেওয়া হয়েছে ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর আবু জাফরসহ সাত জন একসঙ্গে একটি গরু কোরবানি দেন। আবু জাফর বলেন, “আমাদের গরুটার দাম ছিল ৯০ হাজার টাকা। মাংস হয়েছে চার মণ। চামড়ার দাম পেয়েছি ২০০ টাকা। এ দামেও চামড়া কিনছিলেন না ব্যবসায়ীরা।

একরকম জোর করেই তাকে চামড়াটা দেয়া হয়েছে। আমাদের এলাকায় পাঁচ টাকাতেও খাসির চামড়া বিক্রি হয়েছে।” রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের কর্মকর্তা জানান, তাদের বকেয়া টাকা পড়ে আছে ট্যানারি মালিকদের কাছে। সরকার কমিয়ে দাম নির্ধারণ করে দিলেও প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কাছে সেই দামেও চামড়া কেনার টাকা নেই। ফলে কম দামে তারা চামড়া কিনেছেন। তিনি জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নিজেরা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কিংবা ঢাকায় ট্যানারি মালিকদের কাছে পাঠান না। তারা কেনার পর সেই চামড়া আবার প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কাছেই বিক্রি করেন। কিন্তু এবার তাদের কাছ থেকে চামড়া কেনার আগ্রহ নেই প্রকৃত ব্যবসায়ীদের। এ কারণে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।

রাজশাহী প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সূত্র মতে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৬০টি। রাজশাহী জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৫২টি। ১৬ হাজার ৭৯ জন খামারির কাছে রয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭২টি গরু, ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫টি ছাগল, ৩৮ হাজার ২৪৫টি ভেড়া ও ৩ হাজার ২১১টি মহিষ। জেলায় এবার কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১৮টি। চাহিদার চেয়ে প্রায় ১০ হাজার বেশি পশু আছে রাজশাহীর ৯ উপজেলায়। তবে প্রকৃত হিসাবটা এখনো প্রস্তুত হয়নি।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top