নোয়াখালীতে পরকীয়ার জেরে খুন হয় মা ও মেয়ে
রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৩ ০৪:৪১; আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৩২
-2023-06-14-22-40-59.jpg)
রং নম্বরে পরিচয় থেকে প্রবাসী মো. আলতাফ হোসেনের (২৮) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে গৃহবধূ নূরু নাহার বেগমের (৪০)। একপর্যায়ে আলতাফ দেশে চলে এলে নূরু নাহার কথা দিয়ে তা না রাখায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রং নাম্বারে কলের সূত্র ধরে ৪ মাস আগে আলতাফ হোসেনের সঙ্গে নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগমের (৪০) পরিচয় হয়।
পরিচয়ের এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে নূর নাহার বেগম প্রবাসী আলতাফকে দেশে এসে ব্যবসা করতে বলে। ব্যবসায়ের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে আলতাফকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন নূর নাহার।
তার আশ্বাসে ওমানের ভিসা বাতিল করে গত ৮ জুন পরিবারের সবার অজান্তে দেশে ফিরে আসে আলতাফ। দেশে এসে টাকার জন্য নূর নাহারের বাসায় ৪-৫ বার দেখা করে তাকে টাকা দিতে বললে নূর নাহার তাতে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নূর নাহারের ক্ষতি করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকে আলতাফ।
এসপি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, পুনরায় টাকা চাওয়ার জন্য সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর গুপ্তাংক বারলিংটন মোড় এলাকায় নূর নাহারের বাসায় গেলে তিনি আজও টাকা দিতে অস্বীকার করেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে নেওয়া নতুন একটি ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি নূর নাহারকে কোপাতে থাকে আলতাফ।
এসময় নুর নাহার বেগমের মেয়ে এসএসসি ফল প্রার্থী ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭) মায়ের চিৎকার শুনে তার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আলতাফ হোসেন তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।
তিনি বলেন, আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে। তাকে বাসা ভাড়া নেওয়ার কৌশল করে আজ ব্যবসার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নুরুন্নাহার। টাকা না দেওয়ায় হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছুরি এবং ছুরির কভার উদ্ধার করেছি।
তিনি আরো বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত প্রিয়ন্তী দৌড়ে নিচে নেমে আসলে তার পিছু পিছু আলতাফ হোসেন ও দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। স্থানীয়রা প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর নূর নাহার বেগম রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পুলিশ সুপার বলেন, আমরা ঘটনার ছয় ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছি। সবার আগ্রহ ছিল বলেই আমরা বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছি। গৃহবধূর স্বামী ফজলে আজিম কচির দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আলতাফকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: