ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করাতে হবে

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০২৩ ১৪:১৭; আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০১:১২

ছবি: ফাইল

জলবায়ু পরিবর্তনে রাজধানীসহ সারা দেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি; বৃষ্টির ধরন পালটে যাওয়া এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ নানা কারণে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়ছে। এবার বর্ষা মৌসুমের আগেই ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রার্দুভাব দেখা দিচ্ছে।

ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা প্রজননের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিদিন সারা দেশে অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, হাসপাতালে ছুটছে। অনেকে দ্রুত শক সিনড্রমেও চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে সবার আগে মশকনিধনে জোর দিতে হবে। মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের মোক্ষম উপায়।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ যুগান্তরকে এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল্লাহ বলেন, এবার বর্ষার মৌসুমের আগেই থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে যত্রতত্র পানি জমছে। ভবন নির্মাণ এলাকায় দিনের পর দিন পানি জমে থাকছে। মানবসৃষ্ট কারণে নানা সময় মারাত্মকভাবে পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে। ফলে এডিসের লার্ভার বংশ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। সারা দেশে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা ছড়িয়ে পড়ছে। মশা বাড়লে মানুষকে কামড়াবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এবার ডেঙ্গুর চারটি ধরনের মধ্যে ডেন-২ বেশি দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তির শক সিনড্রম দেখা দিচ্ছে। শকে চলে যাওয়া রোগীর রক্তচাপ অতিদ্রুত কমে যায়, রক্তের অনুচক্রিকা কমে যায়, শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়। অনেক রোগী মারাও যায়। কিন্তু শুরুতে অনেকে জ্বরকে তেমন গুরুত্ব দেয় না।

প্রয়োজনের তুলনায় মশা নিধনের উদ্যোগ কম মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ রোধে সবার আগে মশা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য মশা নিধনে নিয়োজিত দপ্তরগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এ কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উড়ন্ত মশা মারার ব্যবস্থা করতে হবে। অফিস আদালতের আঙিনা ও বাড়িঘরে মশা জন্মে এমন জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশার হটস্পট খুঁজে সেখানে অভিযান চালাতে হবে। কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শ নিয়ে বিশেষ বিশেষ জায়গায় এখনই চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে। বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পর্যায়ে মশা নিধনের সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নিয়মিত এডাল্টিসাইডিং, লার্ভিসাইডিং, ফগিংসহ মশা মারার কার্যকর ওষুধ ছিটাতে হবে। মশা নিধনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বেসরকারি সংস্থাসহ পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সামাজিক আন্দোলন করে তুলতে হবে। কেউ মশার উৎপত্তিস্থল সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি করলে ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, দিনের বেলায় মশার কামড় থেকে বাঁচতে হলে সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে ফুলহাতা জামা-প্যান্ট পরিধান করতে হবে। দিনে বা রাতে ঘুমানোর আগে মশারি টাঙাতে হবে। কারও সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাঁশির মতো সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে।

এতে রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া সহজ হবে। রোগীর ব্যবস্থাপনায় পরিবার থেকে শুরু করে হাসপাতাল সব জায়গায় শতভাগ প্রস্তুতি থাকতে হবে। তবে সবার আগে এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংস করতে হবে। এজন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের মোক্ষম উপায়-এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top