ডেঙ্গুতে ঢাকার পর চট্টগ্রামের অবস্থা নাজুক, ভর্তির ৩৬ শতাংশই শিশু

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২৩ ১৫:০৭; আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৩:২২

ছবি: ফাইল

ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বিস্তার শুধু ঢাকায়ই সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৫৭ জেলায় রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে সবার হিসাব সরকারের খাতায় থাকে না। শুধু ভর্তির পরই জানা যায় কী পরিমাণ মানুষের ঠিকানা হচ্ছে হাসপাতাল। খবর যুগান্তরের। 

এ বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কম হলেও মে-জুন থেকে ভয়াবহ হয়ে উঠে ডেঙ্গু। এ সময় ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮২ জন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৬১ জন, আর মৃত্যু দুজনের। ভুক্তভোগী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এবার ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে বেশি জটিলতা নিয়ে আসছে শিশু। সরেজমিন রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তির প্রায় ৩৬ শতাংশই শিশু।

এদিকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ঠেকাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকার সব হাসপাতালসহ ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনকে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগী হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছালে তার চিকিৎসা দিতে হবে। কেউ এ ব্যাপারে শৈথিল্য দেখালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন, কাগজে-কলমে ডেঙ্গুর যে তথ্য মানুষ জানতে পারে, বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৫৭ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার কথা জানালেও প্রায় সব জেলায় এর বিস্তার ঘটেছে। তারা বলেন, মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগীর তথ্য ও চিকিৎসা নিয়ে লুকোচুরি করার সময় এখন নয়। এটিকে জাতীয় সমস্যা মনে করে যেভাবে এর বিস্তার ঘটছে, তা যে কোনোভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

জনস্বাস্থ্যবিদ ড. আবু জামিল ফয়সাল যুগান্তরকে বলেন, সরকার ৫৭ জেলার কথা বললেও সব জেলায়ই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের কাছে সব তথ্যও নেই। হাসপাতালের বাইরে কতজন আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কতজন মারা যাচ্ছেন, সেই তথ্যও নেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সমন্বিতভাবে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকার ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ৭ হাজার ৯৭১ জন এবং মারা গেছেন ৫১ জন। বিভাগের হিসাবে ঢাকা জেলা ব্যতীত এই বিভাগে মোট ভর্তি হয়েছেন। ঢাকা মহানগরের বাইরে এই বিভাগে হাসপাতালে মোট ভর্তি ৫৬২ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ভর্তি ১৮৬, মৃত্যু ১ জন; চট্টগ্রাম বিভাগে ভর্তি ১ হাজার ৩৪২, মৃত্যু ১১ জন; খুলনা বিভাগে ভর্তি ২৭৭; রাজশাহী বিভাগে ভর্তি ৬০; রংপুর বিভাগে ভর্তি ৬০, মৃত্যু ১ জন; বরিশালে ভর্তি ৭৮১, মৃত্যু ১ জন এবং সিলেটে ভর্তি ৫৯ জন। সব মিলিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ২৯৮ জন। মারা গেছেন ৬৫ জন। বর্তমানে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ১৬৫ জন।

অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এবং যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, ৪ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৯ হাজার ৮৭১ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ১ থেকে ৪ বছর বয়সি ৮৩৪ জন (৮ শতাংশ), ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি ৭৬৬ জন (৮ শতাংশ) এবং ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সি ১৮৩২ জন (১৯ শতাংশ) শিশু ভর্তি হয়েছে। তবে অধিদপ্তর শিশুদের পৃথক মৃত্যুর তথ্য দিতে পারেনি।

এছাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সি ১৫৮৬ (১৬ শতাংশ), ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সি ৯৯৮ (১০ শতাংশ), ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সি ৮৩৪ (৮ শতাংশ) এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৪৫১ জন (৫ শতাংশ) রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্য পুরুষ ৬০৭১ (৬২ শতাংশ) এবং নারী ৩৮০০ (৫ শতাংশ) জন।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর শুরুতে প্রচণ্ড জ্বর আসে, প্রচণ্ড মাথাব্যথা; শরীর, চোখ ও পেট ব্যথা করে। অনেকের বমি হয়। প্রায় চার দিন টানা জ্বর থাকার পর কমে যায়। তখন থেকে ডেঙ্গুর কমপ্লিকেশন যেমন প্লাজমা লিকেজ, পেটে-বুকে পানি জমা ও রক্তের প্লাটিলেট কমে যায়। হেমোরজিক বা দাঁত, নাক, ফুসফুস, পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়। অনেক শিশু অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এভাবে নানা উপসর্গ নিয়ে শক সিনড্রোম দেখা দেয়। তখন স্যালাইন দিতে হবে। তবে শক সিনড্রোম অর্থাৎ শরীরের সেল বা কোষের মধ্যে অক্সিজেন প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হয়। সেল ইনজুরিগ্রস্ত হয়। এটি দীর্ঘায়িত হলে সেলের ভেতর ল্যাক্টিক অ্যাসিড জমা হয়ে মাল্টি অর্গান ফেইলর অর্থাৎ রোগীর কিডনি, লিভার-হার্ট, ফুসফুস ড্যামেজ হয়ে যায়।

শুক্রবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-১-এর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২নং বিছানায় ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ভর্তি থাকতে দেখা যায় আট বছর বয়সি আলিফাকে। হাতে ক্যানুলা পরানো শিশুটি কোনোভাবেই হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছিল না।

তার মা সাথী সুলতানা যুগান্তরকে বলেন, মোহাম্মাদপুরের চন্দ্রিমা মডেল টাউন এলাকায় তারা বাস করেন। ছয় দিন আগে হঠাৎ মেয়ের জ্বর আসে। তিন দিন বাসায় প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ খেয়েও শারীরিক উন্নতি হচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার এখানে নিয়ে আসেন। জ্বরের শুরু থেকেই শরীর তীব্র ব্যথা, পেট ও মাথাব্যথা এবং খাবারে অরুচি ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর ডাক্তার ডেঙ্গু ছাড়াও রক্তের একাধিক পরীক্ষা দেয়। রিপোর্ট দেখে তারা জানান, রক্তের প্লাটিলেট ৩ লাখের ওপরে থাকার নিয়ম হলেও এক লাখে নেমে এসেছে। দুই দিনে টানা সাত ব্যাগ স্যালাইন দিতে হয়েছে।

এই ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স লাভলি আক্তার যুগান্তরকে বলেন, সোহরাওয়ার্দীতে শিশুদের জন্য পৃথক ডেঙ্গু ওয়ার্ড নেই। মেডিসিন বিভাগের দুটি ওয়ার্ডের তিনটি ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪নং ওয়ার্ডে পেয়িং, নন-পেয়িং মিলে ৪০টি বিছানা রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।

৩১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শিমু আক্তার বলেন, মে মাসে মাত্র একজন এবং জুনে আট শিশু ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়। জুলাইয়ের শুরুতে অর্থাৎ ঈদর পর রোগী বাড়ছে। এই ওয়ার্ডে সোমবার সাত ও বৃহস্পতিবার ছয় শিশু ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আজ ৩, ৫, ৬, ৭, ৮, ১২, ১৩ ও ১৬নং বিছানায় ডেঙ্গু রোগী আছে।

সেখানে কতর্ব্যরত চিকিৎসক রমেশ শ্রেষ্ঠা যুগান্তরকে বলেন, প্রতিদিন বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে গড়ে একশজন শিশু জ্বর নিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রোগ নিয়ে ২৬ জন শিশু বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন ডেঙ্গি আক্রান্ত। শিশু ওয়ার্ডের সব ইউনিটেই ডেঙ্গু রোগী আছে। আজও (শুক্রবার) ৩ নম্বর ইউনিটে একজন শক সিনড্রোম ও দুইজন ডেঙ্গু হেমরজিক উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তরা ডেঙ্গু ফিভার উইথ ওয়ার্নিং সাইন নিয়ে আসছে। তবে শক সিনড্রোম নিয়ে বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের ২নং ওয়ার্ডের পি-৫ বিছানায় ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ভর্তি থাকতে দেখা যায় ১৪ মাস বয়সি সিয়ামকে। ছোট্ট হাতে ক্যানুলা পরানো অবস্থায় তখনও স্যালাইন চলছিল। শিশুটির বাবা সাভারের মো. রাসেল জানান, ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি গিয়ে ২৯ জুন বাচ্চার জ্বর আসে। জ্বর তিন দিন ওঠানামা করে। ৩ জুলাই স্থানীয় এক ফার্মাসিস্টের পরামর্শে এনএস-১ ও আইজিজি, আইজিএম পরীক্ষা ডেঙ্গু পজিটিভ শনাক্ত হয়। রক্তের প্লাটিলেট (অণুচক্রিকা) ১ লাখ ১৮ হাজারে নেমে যায়। ফলে ৪ জুলাই এখানে ভর্তি করি। জ্বরের পর চিকিৎসা বাবদ ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

পাশেই পি-৬নং বিছানায় ভর্তি ১০ মাস বয়সি সোহানের মা রুনা আক্তার বলেন, ছেলে তিন দিন ধরে জ্বরে ভোগার পর বুধবার রাতে এখানে ভর্তি করেছি। শুরুতে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসত। বুকের দুধ খেতে চাইত না। সারাক্ষণ কান্না করত। মিরপুর এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তখনই এখানে এসেছি।

শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগী আসছে। ডেঙ্গুতে শিশু ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বৃহস্পতিবার ভর্তি ছিল ৩০ জন এবং শুক্রবার পর্যন্ত ৪৩ জন আছে। এছাড়া আইসিইউতে চারজন এবং এইচডিইউতে দুইজন ভর্তি আছে। চলতি বছর ১৩৪ শিশু ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছে। বাকি ৯৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। ডেঙ্গু চিকিৎসায় দুই নম্বর ওয়ার্ডে ১৬টি এবং ১৪নং ওয়ার্ডে ১২টি বিছানা প্রস্তুত করা হয়েছে। সব বিছানা রোগীতে পূর্ণ।

এদিকে মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ডের সবকটি ডেঙ্গু রোগীতে পূর্ণ। এর বাইরে বারান্দায়ও অনেকে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীদের মধ্যে শিশু বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, এবারের ডেঙ্গু রোগীদের বেশির ভাগই দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার আক্রান্ত হয়ে আসছে। শিশুরাও কমপ্লিকেটেড ডেঙ্গু সিনড্রোম নিয়ে আসছে। অনেক শিশুর ক্যাপিলারি লিক সিনড্রোম অর্থাৎ পেটে পানি জমে যাচ্ছে। এসব শিশুর চিকিৎসায় পর্যাপ্ত লিকুইড দরকার হচ্ছে। পেট ব্যথার কারণ খুঁজে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে হচ্ছে। নিয়মিত ফলোআপে রাখতে হচ্ছে। কিছু শিশুর অনবরত বমি ও শরীর ফুলে যাচ্ছে। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মুগদা হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫২০ জন ভর্তি এবং ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ৩৫৭ রোগী ভর্তি আছে।

বাংলাদেশ শিশু সংক্রামক ব্যাধি সমিতির সভাপতি ও শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, বেশির ভাগ শিশু-কিশোরের ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে উপসর্গবিহীন বা হালকা লক্ষণ দেখা যায়। ডেঙ্গুজ্বর কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থতায় রূপ নিতে পারে, যা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের বিভিন্ন জটিলতাসহ মৃত্যুও ঘটাতে পারে। এসব মৃত্যুর বেশির ভাগেরই কারণ হচ্ছে চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হওয়া। সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরে চিকিৎসক বাড়িতে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন। সঙ্গে প্যারাসিটামল সিরাপ বা ট্যাবলেট এবং প্রয়োজনে সাপোজেটরি ব্যবহার করতে বলেন। তবে জ্বর কমানোর জন্য কোনো অবস্থায়ই এসপিরিন বা ক্লোফেনাক, ভলটারিন ধরনের ওষুধ দেওয়া যাবে না। মাথা ধুয়ে গা মুছে দিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তরল, খাবার স্যালাইন ও পানি খাওয়াতে হবে। মাঝারি বা তীব্র ডেঙ্গুজ্বরে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১৮২, এক মৃত্যু : এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ১৮২ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং একজন মারা গেছেন। নতুন ভর্তি রোগীর ৭২ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১১০ জন ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে সারা দেশে ২ হাজার ১৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৫২৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১১ হাজার ২৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭ হাজার ৯৭১ এবং ঢাকার বাইরে ৩ হাজার ৩২৭ জন ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে সারা দেশে ছাড়প্রাপ্ত ডেঙ্গু রোগী ৯ হাজার ৬৮ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ছাড়প্রাপ্ত রোগী ৬ হাজার ৩৯২ এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ৬৭৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার এবং এর চিকিৎসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. রাশিদা সুলতানা যুগান্তরকে বলেন, সব হাসপাতাল রেডি আছে। কেউ আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতে গেলে তার চিকিৎসা দিতে হবে। সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সবাইকে সেবা নিতে হবে। আমি সবাইকে বলব, সবাই মশারি টানিয়ে ঘুমাবেন। নিজ বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top