বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের অপপ্রচার নিয়ে সরব ‘ফ্যাক্ট-চেকার’ মামলার মুখে
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪০; আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৬

ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য এবং অখণ্ডতা নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালানোর অভিযোগ এনে ভারতের অন্যতম শীর্ষ ফ্যাক্ট-চেকার ও সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ভারতের এই শীর্ষ ফ্যাক্ট-চেকার বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের অপপ্রচার নিয়ে সরব ছিলেন। তিনি ক্রমাগত ফ্যাক্ট চেকিং-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সংক্রান্ত সত্য খবর সামনে আনছিলেন।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতের গণমাধ্যম, যাকে ‘গডি মিডিয়া’ বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশ সম্পর্কে ক্রমাগত মিথ্যা খবর প্রচার করে আসছিলো, এমনকি এখনও তারা অব্যাহত রেখেছে। ভারতের উগ্রবাদী বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে। যদিও, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে তারা বারবারই ব্যর্থ হয়েছে। এই ফ্যাক্ট-চেকার এসব তথ্য সামনে তুলের আনার পরপরই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর আসে।
তবে, জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা হয়, গত ৩ অক্টোবর সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্ট শেয়ার করার কারণে, যেখানে তিনি বিতর্কিত হিন্দু পুরোহিত ইয়াতি নরসিংহানন্দের ঘৃণামূলক বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। জুবায়েরের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, নরসিংহান্দ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন।
ইসলামবিদ্বেষী নরসিংহানন্দের এহেন কাণ্ডে, সেসময় ভারতজুড়ে মুসলিমরা বিক্ষোভ করে। এরপরই, নরসিংহানন্দের শতাধিক উগ্র সমর্থকরা থানা ঘেরাও করে জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দাবি জানায়। পরে, বিজেপি’র রাজনীতিবিদ ও নরসিংহানন্দের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উদিত্য ত্যাগীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা করে। ঘৃণামূলক বক্তব্যের পর এখনো নরসিংহানন্দের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পুলিশ বলছে, জুবায়েরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, তা ভারতীয় আইন অনুযায়ী জামিন-অযোগ্য। যদি আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার অন্তত ৭ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা, এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে। মঙ্গলবার এই মামলার সংক্ষিপ্ত শুনানি করেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট অল্টনিউজ-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা জুবায়ের তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তিনি ছাড়াও এর আগে বহু সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া চ্যানেলও এই ভিডিওটি শেয়ার করেছে।
সম্প্রতি, বিবিসিকে জুবায়ের বলেন, তার ফ্যাক্ট-চেকিং সংক্রান্ত কাজের জন্যই তাকে টার্গেট করা হয়েছে। বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, ক্রমাগত ঘৃণামূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, এমন একজন মানুষের অনুসারীদের অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে। ঘৃণামূলক বক্তব্যের খবর তুলে ধরছে, তারা এমন মানুষের পেছনে লেগেছে। অথচ, ঘৃণামূলক বক্তব্য দেওয়া মানুষ মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেসব মানুষ ভারত সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা করছে, তাদের কণ্ঠরোধের প্রচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন জুবায়ের।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: