অবৈধ সংযোগ কাটতে গিয়ে হামলায় বিদ্যুৎকর্মী নিহত

অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় বগুড়ার শিবগঞ্জে দুর্বৃত্তরা আব্দুল হান্নান (৩৩) নামে পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের ভায়েরপুকুরে ঘটনাটি ঘটে। এ সময় সহকারী মহাব্যবস্থাপকসহ আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, পরনন্দপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ (৫০), তার ছেলে সোহেল রানা (২৩), চনন্দপুরের খাজা বাহাউদ্দিনের চেলে বাবর আলী (৩০), জহরুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমান (৩০) ও বড় বেলঘড়িয়া গ্রামের কাজী ইমারত উদ্দিনের ছেলে ইমরান কাজী (৩২)।

নিহত আব্দুল হান্নান বগুড়ার শাজাহানপুরে খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পীরব সাবজোনাল অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আহতরা হলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একই কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রকিবুজ্জামান এবং ৪ লাইনম্যান পিন্টু প্রামাণিক, বিকাশচন্দ্র, ফাকরু হোসাইন ও আজিজুল হক।

বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মনিরুজ্জামান জানান, ‘ভায়েরপুকুরে সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আব্দুল হালিম ও আবু সাঈদের নামে নেওয়া আবাসিক সংযোগ থেকে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। বিষয়টি জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য পীরব সাব-জোনাল অফিস থেকে ৭ জনের টিম শুক্রবার রাত ১১টায় ঘটনাস্থলে যায়।’

তিনি আরও জানান, ‘তারা অবৈধ ওই সংযোগ কাটতে গেলে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী ও তাদের সহযোগীরা ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারপিট শুরু করেন। এ সময় আব্দুল হান্নান প্রাণভয়ে দৌড়ে চলে যায়। এরপর অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা আমাদের অন্য ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকে রাখে। বিষয়টি পরে শিবগঞ্জ থানায় জানানো হয়।’

‘এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উদ্ধার করলেও আব্দুল হান্নানের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে একটি জমিতে তার লাশ পাওয়া যায়। আহত অন্য ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’ যোগ করেন তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে ফেরা শিবগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর লতিফুর রহমান জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধার করে থানায় আনার পর গভীর রাতে আব্দুল হান্না নামে তাদের আরেক কর্মীর লাশ ধানখেতে পড়ে থাকার সংবাদ আসে। এরপর সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। ভোরে সুরতহাল করার সময় লাশের মুখে রক্ত দেখা গেছে।

বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মনিরুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন তাদেরকে মামলার আসামি করা হবে।