ঢাকায় জাতিসংঘ হাইকমিশনার : প্রথম দিনে তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২ ১৭:১৭; আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:২০

ফাইল ছবি

ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেল বৈঠক করেছেন তিন মন্ত্রীর সাথে। দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানান তারা। ব্যাশেল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংবাদমাধ্যম এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। খবর বনিক বার্তার।

গতকাল সকালে চারদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন মিশেল ব্যাশেলে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুজন বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন কোনো গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নেই বলে মিশেল ব্যাশেলেকে জানিয়েছেন তিনি। দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটিও এসেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের ধারণা বাংলাদেশে গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই, তারা নিজের কথা বলতে পারে না। সরকার এসব নিয়ন্ত্রণ করে। আমি জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারকে বলেছি, আমার এমন কিছু জানা নেই। আমি দেখি যে আমাদের গণমাধ্যম খুবই শক্তিশালী। দেশে নতুন নতুন অনেক গণমাধ্যম লাইসেন্স পেয়েছে। সারা দেশে ২ হাজার ৮০০ পত্রিকা বের হয়।

সরকার সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করে বলে আমার জানা নেই। সরকারের এত ক্ষমতাও নেই।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘ খুব উদ্বিগ্ন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন সফররত হাইকমিশনার। এ বিষয়ে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এ সমস্যা সমাধানে তারা আমাদের সহযোগিতা করতে চায়। এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে থাকবে। আমি বলেছি, রোহিঙ্গা নাগরিকরা আগেও বহুবার বাংলাদেশে এসেছে এবং পরে ফেরত গিয়েছে। কিন্তু এবার সংখ্যা বেশি।

পরে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সেখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান আইনমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি যেটা শক্তভাবে তুলে ধরেছি তা হলো বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানবাধিকারকে সাংঘাতিক মূল্য দেয়। তার কারণ হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সরকার মানবাধিকারকে সবসময় সমুন্নত রাখবে এবং আইন দ্বারা যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে সক্রিয় থাকবে।

মানবাধিকার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষ জোর দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা বলেছি, জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশন এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব পাঠালে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।

বাংলাদেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মিশেল ব্যাশেলে কোনো পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, সেটা হাইকমিশনার নিজেই জানাবেন।

এছাড়া গতকাল বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মিশেল ব্যাশেলে নিখোঁজ মানুষের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আমরা তাকে জানিয়েছি যে বাংলাদেশে তিন কারণে মানুষ নিখোঁজ হয়। প্রথমত, কেউ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করলে তা থেকে বাঁচার জন্য নিজ থেকেই নিখোঁজ হয়। দ্বিতীয়ত, ব্যবসায় লোকসান করলে এবং তৃতীয়ত, পারিবারিক কোনো কারণ থাকলে।

সফরের অংশ হিসেবে আজ জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন মিশেল ব্যাশেলে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ ছাড়বেন জাতিসংঘের এ হাইকমিশনার।

মূল খবরের লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top