মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে প্রবাসীরা

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ২১:১৯; আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ২১:৩৭

ছবি: সংগৃহিত

তৃতীয় পক্ষের মাধ্যম ব্যতীত প্রবাসীদের সরাসরি এমএফএসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এখন থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডাররা প্রবাসী আয় প্রত্যাবাসনের জন্য (দেশে আনার জন্য) বিদেশের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস প্রোভাইডার, ব্যাংক, ডিজিটাল ওয়ালেট, কার্ড স্কিম বা এগ্রিগেটরস পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে। রেমিট্যান্স প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে আগ্রহী মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসী আয় প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিদেশী অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস প্রোভাইডার, ব্যাংক, ডিজিটাল ওয়ালেট, কার্ড স্কিম ও এগ্রিগেটর পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করবে। মোবাইল আর্থিক সেবাদাতাদের বিদেশী সহযোগীদের সঙ্গে কার্যকর ব্যবস্থা থাকবে, যার মাধ্যমে তাদের অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। ওই বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাসী গ্রাহকের মনোনীত সেলফোনের আর্থিক অ্যাকাউন্টে টাকায় রূপান্তরিত হয়ে প্রবেশ করবে।

বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা যথাযথ ই-কেওয়াইসি পরিপালন করে মোবাইল ব্যাংকিং অর্থাৎ এমএফএসে হিসাব খুলতে পারবেন। আর বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো সেলফোনের আর্থিক সেবাদাতাদের অ্যাকাউন্টে লেনদেন নিষ্পত্তির সুবিধা দিতে পারবে। এজন্য অবশ্য নির্দিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিদেশস্থ নস্ট্রো হিসাবে অর্থ জমার পর ওই অর্থের সমপরিমাণ টাকা সেটেলমেন্ট হিসাবে জমা হবে।

নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট হলো বৈদেশিক মুদ্রায় দায়দেনা পরিশোধের জন্য বিদেশের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট। এ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রাহকের পক্ষে বিদেশী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সংশ্লিষ্ট পণ্যবিক্রেতার এলসি মূল্য পরিশোধ করা হয়। আবার রফতানি বিল ও রেমিট্যান্সের অর্থও নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে যোগ হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে প্রবাসীরা উপকৃত হবেন বলে মনে করেন এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির এ মিশুক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটি আমরা পর্যালোচনা করছি। বিদেশ থেকে সরাসরি রেমিট্যান্স আনতে হলে আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। আমাদের করণীয়গুলো নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে প্রবাসীরা বিদেশে বসেও নগদসহ অন্যান্য এমএফএস প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা যখন খুশি তখন দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে। রেমিট্যান্সের অর্থ অবৈধ হুন্ডিতে চলে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সংস্থার পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। হুন্ডির কারবারিরা প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে রেমিট্যান্সের অর্থ পাঠানোর জন্য মোবাইল ব্যাংকিংকে ব্যবহার করছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি রেমিট্যান্স আনার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটি কার্যকর হলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top