মার্কিন রাষ্ট্রদূতের 'নিরাপত্তা হুমকি' দেখছেন না পররাষ্ট্রসচিব

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:১৮; আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ০৫:৫৩

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্র সচিব।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিখোঁজ বিএনপি নেতার খোঁজ নিতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিকে সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ জানানোর ঘটনায় কোন 'নিরাপত্তা হুমকি' দেখছেন না পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কাও নাকচ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠও কর্মকর্তা। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী র‌্যাব এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর বুধবার রাজধানীর শাহীনবাগের নিখোঁজ বিএনপি নেতার বাড়িতে রাষ্ট্রদূতকে অবরোধের চেষ্টা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কি না? এমন প্রশ্নে সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক তো অনেক দিনের পুরোনো। বেশির ভাগ দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বয়স প্রায় ৫০ বছরের কোঠায়। সুতরাং একটা ঘটনা বা এ ধরনের একটা আচরণে সেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলবে বিষয়টা এমন নয়। ওই রকম কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখি না। আমাদের মন্ত্রী যেটা বলেছেন, সঠিক বলেছেন। এটাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।


ঘটনার আকস্মিকতার কারণে উনাদের (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রী বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। সচিব বলেন, একটা ইস্যুতে দুটি দেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় না, সেটা নিষেধাজ্ঞা বা যা–ই হোক। তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে অবশ্যই আমাদের আরও অনেক যোগাযোগ হবে। পুরো বছরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সফর বিনিময় হয়েছে। একটা গুজব ছিল ১০ই ডিসেম্বর আবার নিষেধাজ্ঞা আসছে। কিন্তু সে রকম কিছু ঘটেনি। এতে প্রমাণিত হয়, দুই পক্ষই সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

কূটনীতিকেরা কোথায় যাচ্ছেন, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানছে না। অথচ লোকজন ওই জায়গাগুলোতে গিয়ে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরছে—এমনটা কেন হচ্ছে? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কূটনীতিকেরা যদি কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় যান বা স্পর্শকাতর এলাকায় যান, তখন একটা অনুমতির প্রয়োজন আছে। কিন্তু তারা ঢাকা শহরে কখন কোথায় যাবেন তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সচিব বলেন, রাষ্ট্রদূতের বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের জানালে সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। সেটা দূতাবাসকে চাইতে হয়।

উল্লেখ্য, ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বুধবার রাজধানীর শাহীনবাগে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে একদল লোক তাঁকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। ওই বাড়ির একেবারে ফটকে ছিল ক্ষমতাসীন দলে কর্মী এবং তাদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত 'মায়ের কান্না' নামের একটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থান। অবশ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় আওয়ামী আমলে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের সংগঠন 'মায়ের ডাক' এর মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষ না করেই স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন। শাহীনবাগ থেকে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় নিরাপদে বেরিয়ে তিনি সোজা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান এবং সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ করে তার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top