চাহিদা কম, তবু লোডশেডিং

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী ২০২৩ ২২:০৫; আপডেট: ১২ জানুয়ারী ২০২৩ ২২:০৫

ছবি: বণিক বার্তার

শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় সাধারণত লোডশেডিং হয় না বললেই চলে। তবে এবারের শীত যেন ব্যতিক্রম। যতটুকু চাহিদা পড়ছে, তাতেও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। গতকালও চাহিদা ও সরবরাহে লোডশেডিং ছিল প্রায় ১৮০ মেগাওয়াট। খবর বণিক বার্তার। 

আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ছিল প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং। শীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি হওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। তবে সক্ষমতা থাকলেও কারিগরি ত্রুটি ও জ্বালানির অভাবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সরবরাহকারী সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কর্মকর্তারা।

দেশে এ মুহূর্তে বিদ্যুতের ইনস্টল ক্যাপাসিটি সাড়ে ২২ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১০ হাজার মেগাওয়াট সরবরাহ করতেই হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখার কারণেই এ পরিস্থিতি বলে জানা গেছে। বিপিডিবি সূত্রে জানা যায়, উৎপাদন ব্যয় কমাতে জ্বালানি তেলচালিত বেশির ভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যেই কয়লা ও গ্যাসচালিত তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র কম চালিয়ে বাকি উৎস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে এ পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।

সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, শীতকালে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেরামতে থাকে। আবার যেগুলো চালু থাকে সেগুলোতেও মাঝেমধ্যে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া খরচ বিবেচনায় জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনেও কিছুটা তারতম্য হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হতে পারে। তবে ১০ জানুয়ারি যে সাড়ে ৯০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং, তা মূলত রামপাল ও ভোলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারিগরি সমস্যাজনিত কারণে। এ কারণে ওইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হয়।

সারা দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দৈনিক পরিচালন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৪৩০ মেগাওয়াট (এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)। এর বিপরীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সরবরাহ করে ৯ হাজার ২৫১ মেগাওয়াট। অর্থাৎ এ সময়ে ১৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। রাজধানী ঢাকাসহ চারটি বিভাগে লোডশেডিং না করার তথ্য জানালেও রাজশাহীতে ১০০, রংপুরে ৫৫ ও ময়মনসিংহে ২৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয় বিতরণ কোম্পানিগুলোকে।

এক সপ্তাহের মধ্যে ১০ জানুয়ারিই সারা দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। ওইদিন বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৪৪৫ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে ৮ হাজার ৪৯৩ মেগাওয়াট সরবরাহ হয়। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি ছিল ৯৫২ মেগাওয়াট। ওইদিন রাজধানীতে বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকোকে ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়। এছাড়া ৯ জানুয়ারিও ৪৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং করতে হয় বিতরণ কোম্পানিগুলোকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিডিবির এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন পুরোপুরি বন্ধ। মূল্যজনিত সংকটে বন্ধ রাখা হচ্ছে ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোরও বেশির ভাগ। বাকি উৎসগুলো থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহে তারতম্য তৈরি হচ্ছে। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ মফস্বল শহরে অন্তত কয়েক দফায় লোডশেডিং করতে হয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে।’

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী বিষয়টি স্বীকার করে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র মেরামতের কারণে গত কয়েকদিন লোডশেডিং হয়েছে। তবে এখন আর কোনো সমস্যা নেই। বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সংকট তৈরি হলেই মূলত এ পরিস্থিতি তৈরি হয়।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top