কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দারের প্রয়াণ

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৮:২৮; আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৩৯

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার।

প্রয়াত হলেন দেশের একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ও প্রথিতযশা গবেষক রশীদ হায়দার (ইন্না...রাজিউন)।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর নিজ বাসায় পরপারে পা রাখেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

প্রবীণ এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন রশীদ হায়দারের মেয়ে শাওন্তি হায়দার। তিনি কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভোগছিলেন বলেও জানান তিনি।

দেশের স্বনামধন্য এই কথাসাহিত্যিকের জন্ম ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাই পাবনার দোহারপাড়ায়। তার পুরো নাম শেখ ফয়সাল আবদুর রশীদ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন হায়দার, ডাকনাম দুলাল। তিনি ১৯৫৯ সালে গোপালগঞ্জ ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬১ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করেন।

১৯৬১ সালে বড় ভাই জিয়া হায়দারের কাজ করা জনপ্রিয় পত্রিকা চিত্রালীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় কাজ শুরু করেন তিনি। তার বড়ভাই ও ওই পত্রিকায় কাজ করতেন।

১৯৬৪ সালে রশীদ হায়দারের সুযোগ হয় পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের মুখপাত্র পরিক্রম পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করার।

এর পরেই সম্পাদক হিসেবে ১৯৭০ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ত্রৈমাসিক কৃষিঋণ পত্রিকায়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমিতে চাকরি পান। দীর্ঘদিন চাকরির পর ১৯৯৯ সালে বাংলা একাডেমির পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেন। পরে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।

নিজের জীবনের সেরা কৃতিত্বের কাজটি করেন বাংলা একাডেমিতে কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায়। তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি ছিল মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো মানুষের স্মৃতিচারণা ১৩ খণ্ডের ‘স্মৃতি : ১৯৭১’।

‘নানকুর বোধি’ নামের গল্পগ্রন্থটি প্রথম গল্পগ্রন্থ হিসেবে ১৯৬৭ সালে ১ জানুয়ারি প্রকাশ হয়। ১৯৭২ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে লেখা শুরু করেন জীবনের প্রথম উপন্যাস ‘গন্তব্যে’। অর্ধেক মুদ্রিত হওয়ার পর কোনো এক অজানা কারণে লেখাটি তিনি আর লিখে শেষ করতে পারেননি। তবে বেশ পরে এটি অন্য নামে প্রকাশ হয়।

রশীদ হায়দার তিন মাস ক্লাস করেন দিল্লিতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায়। কারণ ১৯৭৪ সালে তিন বছরের জন্য লেখাপড়ার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু বাংলা একাডেমির চাকরি হারানোর ভয়ে তাকে ফিরে আসতে হয়।

অভিনয় জগতেও ছিল রশীদ হায়দারের পদচারণা। ১৯৬৪ সালে মুনীর চৌধুরীর পরিচালনায় তিনি অভিনয় করেন ‘ভ্রান্তিবিলাস’ নামে একটি নাটকে কিংকর চরিত্রে।

প্রতিথযশা এই লেখক রচনা করেছেন গল্প-উপন্যাস-নাটক-অনুবাদ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা সব মিলিয়ে ৭০ এর অধিক বই। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৪), একুশে পদক (২০১৪), হুমায়ুন কাদির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

প্রয়াত মহান এই লেখকের রচিত জনপ্রিয় গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে- চিম্বুকের নিচে আলোর প্রভা, তিনটি প্রায়োপন্যাস, বাংলাদেশের খেলাধুলা, মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত গল্প, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষাগ্রন্থ, সামান্য সঞ্চয় (নির্বাচিত গল্পসংকলন), স্মৃতি’৭১ (১৩ খন্ড), ১৯৭১ : ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থ, খুঁজে ফিরি, অসম বৃক্ষ, নানকুর বোধি। খবর-যুগান্তর

  • এসএইচ

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top