বিদ্যুৎ উৎপাদন তালিকায় নেই রামপাল

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৩৮; আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৫৩

ছবি: সংগৃহীত

দেশে তীব্র বিদ্যুৎ চাহিদার মধ্যেও বন্ধ রয়েছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) দৈনিক উৎপাদন প্রতিবেদন বলছে, ১৪ এপ্রিল থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট বন্ধ রয়েছে।

বয়লারের টিউব ফেটে যাওয়ায় এটি বন্ধ হয়ে যায় বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। মেরামত শেষে সেটিকে উৎপাদনে আনতে আরো দুই-তিনদিন লাগতে পারে। খবর বণিক বার্তার। 

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) কর্মকর্তারা যদিও বলছেন, তাদের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইএফপিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বণিক বার্তাকে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত শনিবার রাতে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তা মেরামত করে খুব দ্রুতই উৎপাদনে ফিরবে রামপাল। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনো কয়লা সংকট নেই। পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বেশকিছু কয়লা আমদানি প্রক্রিয়াধীন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমুদ্রপথে সেগুলো দেশে এসে পৌঁছবে।

এদিকে সর্বোচ্চ চাহিদার মৌসুমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাগেরহাটসহ আশপাশের জেলাগুলোয় লোডশেডিং শুরু হয়েছে ব্যাপক হারে। একই সঙ্গে জাতীয় গ্রিডে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের বিতরণকারী কোম্পানিগুলোতেও তার প্রভাব পড়েছে।

বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আল্টা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির। বর্তমানে এ্রর একটি ইউনিট উৎপাদনে রয়েছে। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। এরপর জ্বালানি সংকটের কারণে কেন্দ্রটি প্রায় এক মাস বন্ধ থাকে। কয়লা আমদানি করে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে বিআইএফপিসিএল। তীব্র চাহিদার মধ্যে এবার বন্ধ হয়ে গেল যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে।

দেশের তাপমাত্রা দুই সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। পারদ চড়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। তীব্র এ দাবদাহে বিদ্যুৎ চাহিদা তাই অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। বর্তমানে দৈনিক সাড়ে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। গতকালও সর্বোচ্চ চাহিদার (১৬ হাজার মেগাওয়াট) পূর্বাভাস দিয়েছে বিপিডিবি। যেখানে গত ১৩ এপ্রিল সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট। এবারের মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় একটি সরবরাহ আসছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে, ২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। দেশে গতকাল বিদ্যুৎ চাহিদার পূর্বাভাস ছিল দিনের বেলায় ১৪ হাজার মেগাওয়াট ও সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ১৬ হাজার।

বিপিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) শামীম হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে উৎপাদনে নেই। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেটি বন্ধ রয়েছে। মেরামত চলছে। কাজ শেষ হলেই উৎপাদনে ফিরবে।’

এদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমাতে গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি আমদানি করা বিদ্যুতের ওপর গুরুত্ব দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এর মধ্যে বৃহৎ সক্ষমতার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক হারে লোডশেডিং বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও বিপিডিবি বলছে, পরিস্থিতি কঠিন হলেও তাদের সরবরাহ ঠিক রাখতে চেষ্টার কমতি নেই।

রামপাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এসএম ওয়াজেদ আলী সরদার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রামপালের যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে। তাছাড়া সর্বোচ্চ চাহিদার মৌসুমে বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি যাতে কোনোভাবেই বড় ধরনের প্রভাব না ফেলে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিপিডিবি।’



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top