কেন্দ্র সচিবদের বাড়তি সতর্কতা জরুরি

এসএসসির প্রশ্নপত্রে ত্রুটি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ১৮:৪৬; আপডেট: ৯ মে ২০২৪ ২১:২৫

ছবি: সংগৃহিত

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনেই প্রশ্নপত্রে নানা বিভ্রান্তি ধরা পড়েছে। প্রিন্টিং ভুল ছাড়াও কেন্দ্র সচিবদের অজ্ঞতাপ্রসূত বিভ্রান্তি হয়েছে প্রথম দিনে। তবে শিক্ষাবোর্ড থেকে ছোট ছোট ভুলের জন্য পরীক্ষার্থীদেরকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিছু ভুলভ্রান্তি কেন্দ্র সচিব নিজেই সমাধান করতে পারবেন। আবার বড় কোনো ভুল ধরা পড়লে তা জেলা বা শিক্ষাবোর্ডকে জানাতে বলা হয়েছে।

সাধারণ ৯টি বোর্ডের অধীনে দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও এসএসসির প্রথম দিনে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নের সৃজনশীল অংশে সময় উল্লেখ ছিল দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। যদিও শিক্ষার্থীদের দেড় ঘণ্টায় সময়ই পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডগুলো পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘দেড় ঘণ্টা পরীক্ষার নির্দেশনা আসার আগেই প্রশ্ন তৈরি ছিল। তাই সময় নিয়ে প্রশ্নে বিভ্রান্তি। তবে প্রশ্নে যাই লেখা থাকুক না কেন, পরীক্ষা দেড় ঘণ্টাই অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে সব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রুটিনের সাথেও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া ছিল। পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও প্রশ্নপত্রে সময় দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট উল্লেখ থাকতে পারে। তবে পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টা। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এসএসসির পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সৃজনশীল অংশে দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট উল্লেখ থাকলেও তাদের দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে কিছুটা বিভ্রান্তিও সৃষ্টি হয়। প্রথম পরীক্ষায় সারা দেশ ‘ক’ সেটের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়েছে। সেখানে পরীক্ষার নির্ধারিত সময় দেড় ঘণ্টার বদলে দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট উল্লেখ করা ছিল। এ সময়ের মধ্যে পাঁচটি বড় প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয়েছে। তবে পরীক্ষার্থীদের উত্তর দিতে হয়েছে দেড় ঘণ্টায় মোট দুইটি প্রশ্নের।
প্রশ্নের মধ্যে এ ধরনের ভুল থাকায় শিক্ষার্থীরা উত্তর লেখার সময় বিভ্রান্তিতে পড়ে। অনেকে তিনটি বা চারটি প্রশ্নের উত্তর লিখেছে। তবে দেড় ঘণ্টার মধ্যে কোনো প্রশ্নের উত্তর ভালো লিখতে পারেনি বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের।

অন্য দিকে এসএসসির সমমানের ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদেরও তিনটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে বলা হয়েছে, সময় দেয়া হয়েছে এক ঘণ্টা। মোট নম্বর ১৫। কিন্তু আসলে এটা ছিল ৩০ নম্বরের এবং দুই ঘণ্টার পরীক্ষা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রশ্নের সাধারণ কিছু প্রিন্টিং ভুলের জন্যও অনেক কেন্দ্র সচিব শিক্ষার্থীদের সঠিক সমাধান দিতে পারেননি। ফলে ভালো প্রিপারেশন থাকার পরেও ভালোভাবে উত্তর দিতে পারেনি।

এ দিকে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষার্থীদের ভুল নির্দেশনা দেয়ায় জয়নাল আবেদীন সেন্টু নামে এক শিক্ষককে পাঁচ বছরের জন্য সব পাবলিক পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত রোবাবর সকালে বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষায় ২৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের বিপরীতে ১২টির উত্তর দেয়ার নিদের্শনা ছিল। কিন্তু শাখা কেন্দ্র বাগাতিপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের হল সুপারের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সেন্টু পরীক্ষার্থীদের ২৫টি প্রশ্নেরই উত্তর দেয়ার নিদের্শনা দেন। এর ফলে পরীক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সময়েই তাড়াহুড়ো করে উত্তরগুলো দেয়।

পরে কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আহাদ আলীকে অবহিত করেন। এ সময় সব ঘটনা শুনে ইউএনও শিক্ষা বোর্ডের সাথে কথা বলে ওই কেন্দ্রের ১৭০ জন পরিক্ষার্থীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা সমাধান করার ব্যবস্থা করেন এবং কেন্দ্র সুপার সেন্টুকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কার করেন।

রাজধানীর এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, আমার সন্তানের কেন্দ্র মতিঝিল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়। পরীক্ষার প্রশ্নে লেখা ছিল আড়াই ঘণ্টা কিন্তু বাস্তবে ছিল দেড় ঘণ্টা। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর ছাত্ররা এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল পরিদর্শকদের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি। অন্য এক অভিভাবক জানান, যেহেতু করোনার কারণে এ বছর এসএসসির পরীক্ষার আগে স্কুলে কোনো পরীক্ষা হয়নি। এমনকি প্রি-টেস্ট ও টেস্ট ছাড়াই হঠাৎ করে এত গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষায় তারা বসেছে, সেহেতু একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র সচিব ও হল পরিদর্শকদেরকেও সহযোগিতা করতে হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, এ বছরের পরীক্ষার প্রশ্ন আগে তৈরি করা রাখায় এতে সময় লেখা ছিল আগের নিয়মে। প্রশ্ন ছাপাতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। আমরা আগে থেকেই প্রশ্ন প্রিন্ট করে রাখাসহ পরীক্ষার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত হয় দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা নেয়ার। আগে প্রশ্ন ছাপানোয় কিছু ভুল ও বিভ্রান্তির জন্য এমনটি হয়েছে।

সূত্র: নয়া দিগন্ত

 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top