ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠায় সম্পর্ক আরও দৃড় হবে: মির্জা ফখরুল

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৪০; আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৩:০৭

ছবি: সংগৃহিত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর বলেছেন, আমরা ভারত সরকারকে বলেছি, আপনারা আমাদের প্রতিবেশি। আমরা কখনোই চাই না আপনাদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক হোক। শেখ হাসিনা আপনাদের ওখানে আশ্রয় নিয়েছে।

আপনারা আশ্রয় দিয়েছেন কিন্তু শেখ হাসিনা ওখান থেকে যেন এই দেশের মানুষের জন্য আর কোনো ষড়যন্ত্র না করে। সেটা দেখার দায়িত্ব আপনাদের। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। আরও ঘনিষ্ঠ হবে যদি এই ভয়াবহ মানবতাবিরোধীকে দেশে ফেরত পাঠাতে আপনারা সহযোগিতা করেন। তাহলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা বিএনপির আয়োজনে রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদী দলের চিরতরে বিদায় না করা পযন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যে অন্যায়-অপরাধ করবে তাকে জনগণের সামনাসামনি হতে হবে। জনগণই তাদের পাওনা আদায় করে নেবে। যত প্রকার অত্যাচার, নির্যাতন আছে সবই করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অবশেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আমরা এখন মুক্ত ও স্বাধীন। আমাদের দায়িত্ব স্বাধীনতা রক্ষা করা। নয়তো আবার স্বাধীনতা উড়ে যাবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সংখ্যালঘুরা যাতে আনন্দের সঙ্গে পূজা উদযাপন করতে পারে সেদিকে নেতাকর্মীকসহ সকলকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পাড়ায় পাড়ায় ও মন্ডপে মন্ডপে দায়িত্ব পালন করবেন। কোথাও যেন কোনো অঘটন না ঘটে। আমাদের মানুষরা ধর্মভীরু. সবাই ধর্ম ভালোবাসে। ধর্মে ধর্মে কোনোদিন তারা কোন্দল করেনি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে তা হয়। আমাদের দেশে হয় না।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, নতুন সরকার তো উপযোগী সময়ে নির্বাচন দেবে। নির্বাচন দিলে সে নির্বাচনে আপনারা কাকে ভোট দেবেন? ধানের শীষে। মানুষ কেন ভোট দেবে ধানের শীষে? অতীতে ধানের শীষ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার মানুষের ভালো শাসক পেয়েছে। চুরি-চামারি কম ছিল, উন্নয়ন হয়েছে।

আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তা ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাই নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে হবে, সবাই যেন ভোট দিতে পারি। অধিকার ফিরে পাই। দেশ যেন সুন্দর ও শান্তিতে থাকে। তার জন্য আপনাদের সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।

খালেদা জিয়ার প্রশংসা করে ফখরুল বলেন, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ৬ বছর জেলে ছিলেন। জেল থেকে বের হয়ে হাসপাতল থেকে তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন আপনাদের উদ্দেশে। তিনি বলেছিলেন, আমি যখন জেলে ছিলাম, আপনারা আমার জন্য অনেক আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছেন। অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন, অনেকে বুকের রক্ত দিয়েছেন। এখন মুক্ত হয়েছি। আমি চাই না এরপর থেকে প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার কারণে আর কোনো রক্তপাত হোক। সেজন্য আমরা কোনো প্রতিশোধ নিতে চাই না। একটা শান্তিময় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

মঙ্গলবার দেওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই ও করব। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক- সেটাও আমরা চাই। বাংলাদেশ একটা স্বপ্নের দেশ ও শান্তিময় দেশ হোক। ছেলেমেয়েরা যেন সবাই লেখা পড়া করতে ও দুধভাত খেতে পারে। এ ধরনের একটা বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই। যাদের চাকরি নাই তারা যেন চাকরি পায়। কর্মসংস্থান তৈরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। এ ধরনের বাংলাদেশ তৈরি করতে পেছনের দিকে না তাকিয়ে তিনি সবাইকে রুখে দাঁড়াতে ও নতুন দেশ তৈরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

রাণীশংকৈল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ জেলা, উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। এছাড়া জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top