পারিবারিক কলহে ছেলের হামলার শিকার মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা | প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩০; আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩৯

আহত বৃদ্ধা মা নুরুন্নাহার

দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ থামাতে গিয়ে স্কুলশিক্ষক ছেলে ও তার স্ত্রীর বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছেন বৃদ্ধা নুরুন্নাহার বেওয়া (৭০)। আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি রাজশাহীর বাগমারার দর্গামাড়িয়া গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের স্ত্রী। অভিযুক্ত হামলাকারী আবদুল রাবি চাঁনপাড়া আর্দশ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ধর্মীয় বিষয়ের শিক্ষক।

মায়ের অভিযোগ ছেলে তার নামে থাকা জমি-জমা নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে চান। ছেলের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে এবং ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধে না জড়ানোর জন্য বলা হলে ক্ষোভে তার ওপর হামলা করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে বাগমারা প্রেসক্লাবে বৃদ্ধার স্বজনেরা এসে অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই ভাই স্কুলশিক্ষক আবদুল রাবি ও মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বাঁধে। এক পর্যায়ে ঝগড়ার বিষয়টি জানার পর বৃদ্ধা বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। তাদের বিরোধে না জড়ানোর জন্য বলেন বৃদ্ধা।

এক পর্যায়ে আবদুল বারি ও তার স্ত্রী রিনা বিবি ক্ষুব্ধ হয়ে বৃদ্ধাকে পেটান। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এসময় বৃদ্ধার আরেক ছেলে আবু বকর সিদ্দিক ছুটে আসলে তাকেও মারপিট করা হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ঘটনাসস্থলে ছুটে এসে তাদের নিবৃত্ত এবং আহত অবস্থায় বৃদ্ধা নুরুন্নাহারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার বড়ভাই আবদুল রাবি ও তার স্ত্রী মিলে মাকে বেধড়ক পিটিয়েছেন। তার ভাই দীর্ঘদিন ধরে মায়ের কাছ থেকে জমি-জমা রেজিস্ট্রি করে নিতে চান। তাতে আপত্তি জানালে তিনি মায়ের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি এই বিষয়ে আজ বুধবার থানায় অভিযোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ বেলা আড়াইটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে বৃদ্ধা নুরুন্নাহারকে পাওয়া যায়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া থামাতে গিয়ে তার ওপর ছেলে ও তার স্ত্রী মিলে হামলা করেছে। তিনি জানান, বড় ছেলে আবদুল বারিককে সংসারের ক্ষতি করে লেখাপড়া শেখানো ও চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সে (আবদুল বারি) জমি-জমা নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিতে চায়। না দেওয়াতে সে ক্ষুব্ধ ছিল।

স্কুলশিক্ষক আবদুল রাবি বৃদ্ধ মায়ের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার মা আগ থেকেই অসুস্থ তার ওপর হামলা করা হয়নি। তাদেরকেই বিরোধ মেটানোর জন্য বলা হয়েছে মাত্র। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ছোট ভাইয়েরা (মোস্তাফিজুর ও আবু বকর সিদ্দিক) মিলে শক্রুতামূলক ভাবে তাদের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি এবং বাড়ির পাশ দিয়ে কেবল তার যাওয়াতে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

এই বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাফি/০১



বিষয়: বাগমারা


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top