ইন্টেরিয়র ডিজাইন এন্ড ডেকোরেশন যার নেশা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৫১; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ২০:৪৪

চাকুরীর পিছে না ঘুরে আত্মবিশ^াস নিয়ে ছুটে চলা। এ ছুটে চলার সঠিক তারিখটি মনে নেই। কিন্তু বছর পাঁচেক তো হবেই। নিজের প্রতিভার সাথে রুচির সমন্বয় ঘটিয়ে ইট-বালিতে গড়ে উঠা ঘরগুলোকে গ্রাহকদের পছন্দ মতো সাজিয়ে দেয়ায় তার কাজ। পাঠকরা ইতোমধ্যে বুঝে ফেলেছেন ‘ইন্টেরিয়র ডিজাইন এন্ড ডেকোরেশন’ কথা বলা হচ্ছে। আজকের গল্পটা উদ্যেক্তা রাকিব এহসান-এর কাছ থেকেই শুনবো।

রাজশাহী নগরীর সপুরা এলাকার মথুরডাঙ্গার বাসিন্দা বাবুল হোসেন এবং রুবী হোসেন এর পুত্র তিনি। গ্যাজুয়েশন শেষ করেও যুব সমাজের বড় একটি অংশ বেকার। আর প্রতিটি মানুষের নিজস্ব কিছু সত্ত্বা থাকে, নিজস্ব কিছু ইচ্ছা থাকে। উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে নিজের স্বপ্নগুলো পূরণ করার পাশাপাশি আরো কিছু ভালো কাজ করা সম্ভব হবে। এ থেকেই ব্যবসাটা শুরু করেছেন। এবার চলুন তার নিজ মুখ থেকেই শুনি বাকী কথা গুলো।
রাজ টাইমস: এই ব্যবসার আইডিয়া পেলেন কিভাবে?
রাকিব এহসান: আমি অনেক ধরনের ছোট পরিষরে ব্যবসা করেছি। বিদেশ থাকা অবস্থায় কোম্পানির ডিজাইনার যখন লাঞ্চে যেতো তখন আমি উনার কাজগুলো দেখতাম। আর ফেলে দেওয়া কাগজের টুকরো গুলো কুড়িয়ে বাসায় নিয়ে রাতে বসে বসে চেষ্টা করতাম। বিষয়টি একদিন আমার অথোরিটির নজরে আসে এবং আমাকে ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তী সময়ে সেখানে সহকারী ডিজাইনার পদে কাজ শুরু করি। এর মধ্য দিয়েই আমার এই সেক্টরে যাত্রা শুরু।

রাজ টাইমস: ব্যবসার শুরুর দিকের গল্পটা যদি বলতেন?
রাকিব এহসান: সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেয়া খুবই কঠিন একটা বিষয়। নগদ অর্থ বা ইনভেস্ট ছাড়া ব্যবসা হয়না। প্রচন্ড মানষিক চাপের মধ্যে দিয়েই একেবারে শূন্য হাতে শুরু করে দেই। প্রথম কাজেই ১২ হাজার টাকা লস্। নিজের প্রতি একধরনের জিদ চেপে যায়। আরো কঠর পরিশ্রম শুরু করি, মাঝেমধ্যে ছোট-ছোট সফলতার দেখা পেলেও চাপ বেড়েই । বছর শেষে খেয়াল করে দেখি শূন্য হাতে ব্যবসা করে কিছুটা এগিয়েছি কিন্তু একটা স্টেজে এসে থমকে যাচ্ছি, আর পারছি না। নগদ অর্থ বা ইনভেস্টের অভাব অনুভব করি। চোখের সামনে বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে গেলেও আমি কিছুইখ করতে পারিনি। দূর্বল অবস্থায় মন খারাপ নিয়ে নিজেকে আবার প্রস্তুত করেছি। আবার নতুন করে শুরু করছি।

রাজ টাইমস: শুধু কি ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং ডেকোরেশন নিয়ে কাজ করছেন?
রাকিব এহসান: আপাতত ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং ডেকোরেশন নিয়েই আছি। এখন এটাই নেশা, এটাই পেশা।
রাজ টাইমস : ব্যবসার শুরুটা কি অনলাইনে, নাকি অন্য কোনো ভাবে?
রাকিব এহসান: শুরুটা অফলাইনে সরাসরি মার্কেটিং এর মধ্যমে তবে ইদানিং অনলাইনে ভালো রেসপন্স পাচ্ছি বিশেষ করে ‘আমরা রাজশাহীর উদ্যোক্তা’ গ্রুপ থেকেও ভালো সাড়া পাচ্ছি।
রাজ টাইমস: কাজ করতে গিয়ে কখনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন?
রাকিব এহসান: প্রতিনিয়ত হচ্ছি এবং শিক্ষা গ্রহন করছি।
রাজ টাইমস: নতুন উদ্যোক্তারা এই ধরণের ব্যবসায় আসতে চাইলে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
রাকিব এহসান: যেকোন ব্যবসার জন্য একজন উদ্যোক্তার সবার আগে প্রয়োজন নিজের প্রতি আস্থা ও পরিশ্রম করার মানষিকতা।
রাজ টাইমস: উদ্যোক্তা জীবন সফল হতে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?
রাকিব এহসান: বাবা মা এর দোয়া এবং ক্লাইন্টদের সহযোগী মনোভাব।
রাজ টাইমস: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ব্যবসা নিয়ে পরিকল্পনা কী?
রাকিব এহসান: ছোট পরিষদে একটা প্লাটফর্ম তৈরী হয়ে গেছে। এখন এটাকে একটা ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছে।

রাজ টাইমস: উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং রেভিনিউ কেমন?
রাকিব এহসান: একজন উদ্যোক্তার শুরুর জীবনটা খুবই কষ্টকর, আয় কত হয়েছে তার চেয়েও বড় বিষয় যেকোন পরিস্থিতিতে নিজেকে ঠিকিয়ে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া।
রাজ টাইমস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পরা নিয়ে জানতে চাই
রাকিব এহসান: অনেকগুলো সেক্টরের সমন্বয়ে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। এতদিন এই সেক্টরগুলোকে নিয়ে ক্ষুদ্র পরিষদে কাজ করে আসছি। আগামীতে প্রতিটি সেক্টরকে আলাদা করে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই যেনো আরো অনেক লোকের কর্মস্থান তৈরী হয়।জন্মসূত্রে প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছুনা কিছু ক্রিয়েটিভিটি থাকে... কে কি ভাবলো বা বললো এগুলোকে পাত্তা না দিয়ে মন থেকে আসা ভালো কাজের ইচ্ছেগুলোকে সম্মান প্রদর্শন করে যথাসাধ্য চেষ্টা করায় একজন উদ্যোক্তার প্রথম কাজ। উদ্যোক্তা এবং উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে যারা কাজ করছেন তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে সহজসর্তে সহযোগীতার পরিবেশ অতি জরুরি।

রাজ টাইমস: ধন্যবাদ।
রাকিব এহসান: রাজ টাইমসকেও ধন্যবাদ।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top