হত্যা মামলার আসামী ধরতে গড়িমসি পুলিশের, র্যাব-ডিবির হস্তক্ষেপ কামনা
মো. লালন উদ্দীন, বাঘা | প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২১ ২২:২৮; আপডেট: ৫ জুন ২০২১ ২২:৩০

রাজশাহীর বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলে কলার বাগান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিদার ব্যাপারী ও মজনুদর্জি পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন গুলিবিদ্ধ সহ ৩ জন আহত এবং ১ জন নিহত হওয়ার আলোচিত ঘটনাটি বর্তমানে ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে প্রকাশ্য দিবালকে একটি পক্ষের উপর এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষন এবং ঘটনার ২৬ দিন পর রাতের আধারে অপর একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুলিশ সে সময় দুটি মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। বর্তমানে রহস্য জনক কারণে আর কোন আসামীকে গ্রেফতার করেছেনা। ফলে গায়ে বাতাশ লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা। এতে পুলিশের প্রতি জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। আর আতঙ্কে রয়েছেন বাদী পক্ষ।
চরাঞ্চলের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সহ ভুক্ত ভুগীদের দাবি, পৃথক দুটি মামলা রাজশাহী র্যাব কিংবা ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হউক।
চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, ফসলী জমির আগাছা পুড়াতে গিয়ে কলার বাগান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী মজনুদর্জি ও তার লোকজননের উপর পাখি শিকারের ন্যায় গুলি করে দিদার ব্যাপারী ও তার ভাড়া করা গুন্ডা বাহিনী। যাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারি ইউনিয়নের বাংলা বাজারে গ্রামে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ পুলিশ রহস্য জনক কারণে তাদের গ্রেফতার করছে না। এর ফলে উল্লেখিত আসামীরা বাদী পক্ষকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া-সহ তাদের ঘর-বাড়ি ও ফসল লুট করার অভিযোগ তুলে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলেছেন। অথচ পৃথক দুটি মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের একেক জনের নামে বিভিন্ন থানায় ৪ থেকে শুরু ১০-১২ টি করে মাদক মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, আমি উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিং-এ একতরফা গুলি বর্ষন করে ৪ জনকে আহত এবং অন্য এলাকা থেকে ভাড়া করা সন্ত্রাসী দ্বারা ইব্রাহিম হত্যা মামলার ঘটনাটি উপস্থাপন করেছি। এ সময় মিটিং এর সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এক সময় চরাঞ্চলে রাজত্ব করতো পান্না ও লালচান বাহিনী। তাদের সময় কালে সাধারণ কৃষকের ফসল ও গরু মহিষ লুট থেকে শুরু করে এক বছরে ২০ টি হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তত্বাবধায়ক সরকার আমলে আইন শিঙ্খলা বাহীনির হাতে তারা দু’জনই নিহত হন। বর্তমানে দিদার ব্যাপারী পক্ষ নিয়ে লালচাঁন ও পান্নার জায়গা দখল করতে চলেছেন আব্দুর রশিদ ও জিয়া মন্ডল নামে দুই প্রভাবশালী। এরা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশে ঘোরা সহ মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বলে অনেকেই উল্লেখ করেন।
সার্বিক বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশের কোন গড়িমসি নাই। গুলি বর্ষনের ঘটনায় প্রথম দিন আমরা দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে আব্দুর রশিদ নামে এক আসামীর বাড়ী থেকে ১২ বোতল ফেন্সিডিল সহ বিজিবি পরিহিত ন্যায় একসেট পোশাক উদ্ধার করি।
অপর দিকে ইব্রাহিম হত্যা মামলার ২ নং আসামী দিলা ব্যাপারীকে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার বার মাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করি। অন্যান্য আসামীদের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাজার বাজার এলাকা হওয়ায় আইনি জটিলতা সহ কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ঐসব আসামীদের গ্রেফতার করার বিষয়ে আমরা দৌলতপুর থানা পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।
- এসএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: