বাঘার জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের নির্দেশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০১:২৮; আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২৫

স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সরেজমিন পরিদর্শন।

রাজশাহীর বাঘায় অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন এবং ড্রেন নির্মান প্রকল্পে একটি প্রভাবশালী মহল বাধা প্রদান করায় উপজেলার কয়েকটি বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে অত্র অঞ্চলের শত-শত কৃষক। এসব জলাবদ্ধতা থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সেটি দেখভালের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নির্দেশনায় উপজেলার বেড়েরবাড়ি ও হরিপুর বিলে জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার, জেলা প্রকৌশলী (বিএমডিএ), প্রাণিসম্পদ অফিসার, টিএইচও এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উক্ত এলাকা সমুহ পরিদর্শন করেন। অতঃপর তিনটি জায়গা সিলেকশন করা হয়। যেখান দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য যে তিনটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে তাঁর প্রতিবন্ধকতা নিরসনে পুকুর মালিকদের আগামী রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন এর কারনে শুধু বিলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়নি, সমতল এলাকার কিছু নিচু জায়গাতেও জলাবদ্ধতা লক্ষ করা গেছে। আমরা খুব শীঘ্রই এসব জলাবদ্ধতা নিরসন করবো।

অপর দিকে গত প্রায় আড়াই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত (বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের) খাল খনন প্রকল্প। স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এই খাল খনন প্রকল্পের ফলক উন্মোচনের পর শতভাগ কাজের মধ্যে ৮০ ভাগ খনন কাজ ইতোমধ্যে শেষ হলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর মহল আদালতে মামলা করায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এই প্রকল্পটি। ফলে উপজেলার নওটিকা, আরিপপুর, বেলগাছি, বারখাদিয়া, হিজোল পল্লী ও তেপুখুরিয়া-সহ ৬ টি বিলে জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৩ শ’বিঘা জমির ধান-সহ অন্যান্য ফসল।

সম্প্রতি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট কৃষকদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বাজুবাঘা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান।

তিনি তার অভিযোগে জানান, উপজেলার মশিদপুর পদ্মা নদীর মুখে রয়েছে একটি সুইজ গেট। সেখান থেকে সরকারি ভাবে ক্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে এক সময় উপজেলার ৬ টি বিল-হিজোল পল্লী, আরিফপুর, বাজিতপুর, নওটিকা, তেপুখুরিয়া ও বারখাদিয়ায় পানি প্রবেশ করানো হতো। এর ফলে উপকৃত হতেন কৃষকরা। অনেকেই এই খালটির নাম করণ করে ছিলেন চন্দনা নদী।পরবর্তীতে মূল নদী পদ্মার রুপ পরিবর্তন হওয়ায় কতিপয় প্রভাবশালী ক্যানেলের কয়েকটি স্থানে মাটির ব্যাড়া দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। এরপর ১৯৭৪ সালে রহস্য জনক ভাবে রেকর্ড করা নিয়ে এখানে কতিপয় ব্যক্তি আদালতে মামলা করে খাল খননে বাধা সৃষ্টি করেন। ফলে প্রায় ৩ শ’ বিঘা ধান সহ অন্যান্য ফসল এখন পানির নিচে অবস্থান করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা বলেন, এই এলাকায় নদীর সাথে বিলকে সম্পৃক্ত করে গত আড়াই বছর পূর্বে সরকারিভাবে খাল খনন শুরু করা হয়েছিল। মোট ৮ কিলোর মধ্যে ৬ কিলো খনন শেষে হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু সংখ্যক মানুষ খাল খননে বাধা দেয়া সহ আদালতে মামলা করায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। তাঁর মতে, জনস্বার্থে এই খালটি সম্পন্ন করা খুবই জরুরী ।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top