ফজলির জিআই নিয়ে রাজশাহী-চাঁপাই লড়াই

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২২ ০৩:৫১; আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২২

ফজলি আম। ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের খ্যাতি আছে সারা দেশে। নানা জাতের মিষ্টি আমের বিশাল বিশাল বাগান রয়েছে এই জেলায়। এখানে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় ফজলি আম।

গত বছর অক্টোবরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর রাজশাহীর ফজলি আমকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে।

নির্দিষ্ট কোনো ভৌগোলিক এলাকার বিশেষ গুণসম্পন্ন পণ্য, ফসল বা পশুসম্পদকে জিআই সনদ দেয়া হয়।

রাজশাহীর ফজলি আমকে জিআই সনদ দেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হয় প্রতিবাদ। এই অঞ্চলের মানুষের দাবি, ফজলির উৎপত্তি এই অঞ্চলে। তাই রাজশাহীর ফজলির সনদ বাতিলের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে ২৪ মে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে একটি শুনানি হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, ‘রাজশাহীর ফজলি আমের জিআই সনদ পাওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমের উৎপাদন হয়, রাজশাহীতে হয় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে। চাঁপাইয়ে আমের যে বাগান আছে তার অন্তত ৩০ থেকে ৪০ ভাগই ফজলি। সনদ দেয়ার আগে একটু খোঁজখবর নিলেই সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই জটিলতা এড়াতে পারত।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলির জন্য জিআই সনদের দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীদের অন্যতম লেখক জাহাঙ্গীর সেলিম।

তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আমের চারা নিয়েই রাজশাহীতে আমের চাষ শুরু হয়। তাহলে রাজশাহীকে কোন যুক্তিতে জিআই সনদ দেয়া হবে? ফজলি আমের নামকরণের ইতিহাসের সঙ্গেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাম জড়িয়ে আছে।’

সেলিম জানান, প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ে ফজলি আমের উৎপত্তি। জনশ্রুতি আছে, গৌড়ের একটি ভগ্ন প্রাসাদে ফজলি বিবি নামের এক বৃদ্ধা থাকতেন। ১৮ শ শতকের প্রথম দিকে মালদার এক কালেক্টর মিস্টার র‍্যাভেন গৌড়ে আসেন।

ফজলি বিবি তাকে আম খাওয়ান। আমের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে র‍্যাভেন এর নাম জানতে চান। তবে ফজলি বিবি বলেন তার নাম। এরপর র‍্যাভেন সাহেব এই আমকে ফজলি আম হিসেবে প্রচলিত করেন। এখনও মানুষ ফজলি নামেই এই আম চেনে।

রাজশাহীর ফজলি আমের জিআই সনদ বাতিলের দাবিতে অধিদপ্তরে আবেদন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মালিক বলেন, ‘বিভিন্ন দালিলিক প্রমাণসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছিলাম। ২৪ তারিখ শুনানিতেও সেসব বিষয় তুলে ধরব। আশা করি, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ফজলি আমের সনদের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে।’

এর আগে ২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম জিআই সনদ পায়।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top