পদ্মা সেতু ঘিরে স্বপ্ন বুনছেন শরীয়তপুরের দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারি খামারিরা

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২২ ০৬:১৪; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৯:০৮

ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতু ঘিরে স্বপ্ন বুনছেন শরীয়তপুরের গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারি খামারিরা।

খামারিরা জানিয়েছেন, সেতু চালুর পর গবাদিপশু ও দুগ্ধজাতপণ্য রাজধানীঢাকাসহ দেশের সকল অঞ্চলে সহজে ও দ্রুত বাজারজাত করতে পারবেন। এতে খামারিরা আগের তুলনায় বেশি লাভবান হবেন।

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে সহজ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক জেলার প্রাণী সম্পদ খাতের দীর্ঘ দিনের পরিবহণ সংকট কাটিয়ে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি আয়ের আশা জাগিয়েছে খামারি ও জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জেলার গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরা বছরে উৎপাদন করছেন ০ দশমিক ৪৯ লাখ মেট্টিক টন গো-মাংস ও ১ দশমিক ৫ লাখ মেট্টিক টন দুধ। যোগাযোগ সংকটের কারণে থমকে গিয়েছিল সম্ভাবনাময় এ খাত। আগে কোরবানীর পশু ও দুগ্ধতাজ পণ্য ঢাকায় পৌঁছাতে যেখানে সময় লাগত ১৪ থেকে ১৫ ঘন্টা, সেখানে এখন সময় লাগবে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। ফলে সময় ও খরচ সাশ্রয়ের মাধ্যমে খামারিরা লাভবান হবেন অনেক বেশি। তাইতো পদ্মা সেতুর হাত ধরে খামারিরা এখন নতুন উদ্যমে চলার শক্তি পেয়েছেন। যা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে শরীয়তপুরের প্রাণী সম্পদ ও দুগ্ধ শিল্পকে বহু দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শরীয়তপুর থেকে স্থানভেদে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। এরমধ্যে পদ্মা নদী থাকায় জেলার গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারি ব্যবসায়ীদের ফেরি ও ট্রলারে নিয়ে ঢাকায় যেতে অনেক সময় লাগে ও দুর্ভোগে পড়তে হয়, শিকার হয় দুর্ঘটনার।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের গরু খামারি আলী আহম্মেদ কাজী বলেন, গাড়িতে করে গরু ঢাকায় পাঠালেও ফেরিঘাটে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। পাশাপাশি ট্রলারে করে গরু নিলে ডাকাতি হয় এবং অনেক সময়ও বেশি লাগে। অনেক সময় গরু মারাও যায়। পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের এ অঞ্চলের খামারিরা ঢাকার বাজারে সহজে গরু বিক্রি করতে পারবেন। এতে পরিবহন ব্যয় কমে যাবে এবং বেশি লাভবান হবেন খামারিরা।

নড়িয়া পৌরসভার লোনসিং গ্রামের গরু খামারি শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকার বাজারে গরু বিক্রি করতে পারলে খামারিরা আগের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হবেন। এতে করে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়বে।

শরীয়তপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুবোধ কুমার দাস বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এ জেলার গবাদিপশু পালনকারীরা অনেক বেশি লাভবান হবেন। সেতু চালু হলে গবাদিপশু ও দুগ্ধজাত পণ্য ঢাকাসহ দেশের সকল অঞ্চলে সহজে ও কম সময়ে বাজারজাত করতে পারবেন। এতে খামারিরা আগের তুলনায় বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছি।

শরীয়তপুর জেলায় গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারি মোট খামার রয়েছে ১৬ হাজার ২৪৮টি। এরমধ্যে দুগ্ধ উৎপাদনকারি ৮ হাজার ৯৪ এবং মোটাতাজাকরণ গরুর খামার রয়েছে ৮ হাজার ১৫৪টি। মোটাতাজাকরণ গরুর মধ্যে ১০ ভাগ বাছুর। বর্তমানে জেলায় সাড়ে ১৬ হাজার খামারি প্রায় ৩ লাখ গরু পালন করছেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top