বাকির টাকা পাওয়ার আশায় দোকানের পাশেই দিন কাটাচ্ছেন ‘বাবু ভাই’
রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪৯; আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫ ২২:১২
-2022-12-30-21-48-40.jpg)
শিক্ষার্থীদের বাকি খাইয়ে প্রায় পথে বসা মানিক হোসেন ওরফে বাবু বকেয়ার টাকা তুলতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ দোকানের আশপাশেই থাকছেন। শিক্ষার্থীদের কেউ যদি বাকির টাকা পরিশোধ করতে আসেন, তাই তাঁর এ অপেক্ষা। দোকানের পাশে বসে খাতা উল্টেপাল্টে তিনি বাকি খাওয়া শিক্ষার্থীদের ফোন দিতে দেখা যায়। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পাচ্ছেন না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি)শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে খাবারের দোকান চালাতেন মো. মানিক হোসেন (৩৩)। শিক্ষার্থীরা তাঁকে ‘বাবু ভাই’ বলে ডাকেন। বাজারের টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে গত (২২ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে বাবুর দোকানে ১৩ জন কর্মচারী কাজ করতেন। তাদেকে দৈনিক ৪ থেকে ৫শত টাকা পেতেন। তার দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ১৩ জন কর্মচারীও কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
দোকান মালিক মানিক হোসেন বাবু বলেন, গত ১২ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার কথা ছিল। এ কমিটি হওয়ার আগে দলবল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর হোটেলে খেয়েছেন। আর মানিককে বলা হয়েছিল কমিটি হলে তাঁরা পুরো টাকা দিয়ে দেবেন।কিন্তু কমিটি না হওয়ায় হোটলে ব্যবসায়ীকে কোন টাকা দেওয়া হয়নি।
তিনি দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছে বকেয়ার টাকা পান বলে জানান। সেখানে কোনো শিক্ষার্থীর কাছে বেশি আবার কোনো শিক্ষার্থীর কাছে কম। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বাকি টাকার পরিমাণ প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা ওপরে। এতে এক নেতার কাছে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার টাকা পাওয়ার কথা বলেন তিনি।
এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে আশ্বাস পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী সময় নিয়েছে। কেউ বলছে জানুয়ারির ২ তারিখ দিবে আবার কেউবা ৫ তারিখ। এখন দিবে কিনা সেটা নিয়ে অনিশ্চিত এ দোকানি। তবে তিনি সকল শিক্ষার্থীর মুখ পানে চেয়ে আছেন। শিক্ষার্থীরা কিছু টাকা দিলে তিনি আবারও দোকান চালু করবেন বলে জানান তিনি।
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, 'বাবু ভাই অসম্ভব ভালো একটা মানুষ। ভাইয়া ছাড়া কখনো ডাক দেয়না আমাদের। আমিও মাঝে মাঝে বাকি খাই কিন্তু সময়ে সময়ে তা পরিশোধ করে দিচ্ছি। এখানে যাঁরা দলীয় পরিচয়ে বা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে বাকি খেয়ে বকেয়া পরিশোধ করছে না তারা ঠিক করছেন না বলে জানান তিনি। তাদের উচিত বাবু ভাইয়ের এমন বিপদে তার বকেয়া পরিশোধ করে তার পাশে দাঁড়ানো।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: