এখনও পৌঁছায়নি ৭০ ভাগ বই

রাজশাহীতে বই উৎসব নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:০৬; আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:০৬

ফাইল ছবি

রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুলে এখনও পৌঁছায়নি ৭০ ভাগ বই। মাধ্যমিক ও সমান পর্যায়ে রাজশাহীতে বইয়ের চাহিদা ৪৫ লাখ ২১ হাজার। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত বই এসেছে মাত্র ৩০ ভাগ। ফলে বই উৎসবের আগে পুরোপুরি আসবে কিনা- তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, প্রতিবছরের মতো ২০২৩ সালের পহেলা জানিুয়ারিতেই মহানগরীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে বই উৎসব হবে।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রমতে, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলায় সম্ভাব্য শিক্ষার্থী ধরা হয়েছে মোট তিন লাখ ৩১ হাজার ১৮০ জন। এর মধ্যে মাধ্যমিক ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে দুই লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন, মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে ৪০ হাজার ৯৬০ জন, এবতেদায়িতে (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি) ৪৮ হাজার ৮৭০ জন, এসএসসি ভোকেশনালে ১৪ হাজার ৪০ জন এবং ইংরেজি ভার্সনে ৮৪০ জন শিক্ষার্থী।

এর বিপরীতে ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৪৩টি পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিকে (ষষ্ঠ থেকে নবম) ৩২ লাখ ৭০ হাজার ৬৮০, মাদ্রাসায় (ষষ্ঠ থেকে নবম) ছয় লাখ ৩২ হাজার ৯৪৫, এবতেদায়িতে (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি) তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৯০, এসএসসি ভোকেশনালে দুই লাখ ৫২ হাজার ৮৪৮ এবং ইংরেজি ভার্সনের জন্য ১১ হাজার ২৮০টি বই চাওয়া হয়েছে। তবে এই বিশাল চাহিদার বিপরীতে শুক্রবার পর্যন্ত মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বই পৌঁছেছে বলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে এতথ্য জানান। তিনি আশা করছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ বই চলে আসবে।

এদিকে কাগজের দাম বাড়ায় বই ছাপানোর কাজও পিছিয়ে গেছে বলে সূত্র জানায়। এছাড়া এবার প্রচলিত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে ঢালাওভাবে সাজানো হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। এর জন্য সম্পূর্ণ নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের বিষয় নির্বাচনেও এসেছে বেশ পরিবর্তন। প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা বই ছাপানো হয়েছে। প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত আছে আলাদা অধ্যায়। নতুন শিক্ষাক্রমে ‘চারুকলা’র নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’।

এদিকে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণির পাইলটিং শুরু হচ্ছে। এজন্য নতুন সিলেবাসও প্রণয়ন করেছে এনসিটিবি। রাজশাহী মহানগরীর পিএন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোদাগাড়ী উপজেলার আফজি উচ্চ বিদ্যালয় ও দুর্গাপুর উপজেলার আমগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়কে পাইলটিং প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয় থাকবে। আর মাধ্যমিক স্তরে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়েও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শ্রেণিকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ ভাগ। আর সামষ্টিক মূল্যায়ন ৪০ ভাগ। এছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে শতভাগ।

শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সবাইকে পড়তে হবে ১০টি বিষয়। দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে নবম ও দশম শ্রেণিতে জীবন ও জীবিকা বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী কৃষি, সেবা বা শিল্প খাতের একটি অকুপেশনে দক্ষতা অর্জন করবে এবং দশম শ্রেণি শেষে যে কোনো একটি পেশায় কাজ করার মতো পেশাদারি দক্ষতা অর্জন করবে। প্রতিবছরের মতো ২০২৩ সালের পহেলা জানিুয়ারিতেই বই উৎসব হবে। মহানগরীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই উৎসবের আয়োজন করা হবে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top