দুই মাস পর মধ্যরাতে ইলিশ ধরতে নামছেন জেলেরা

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১ মে ২০২৩ ০০:৪৬; আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ১৮:১৩

ছবি: সংগৃহীত

আজ রোববার (৩০ এপ্রিল) দুই মাস পর মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরতে প্রস্তুত জেলেরা। ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় (মার্চ-এপ্রিল) মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ রাত ১২টায়। খবর ইত্তেফাকের।

জানা যায়, জেলার অধিকাংশ মানুষ মাছ আহরণ ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। জেলেদের মধ্যে অধিকাংশ জেলে গুল্টিজাল ব্যবহার করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা আহরণ করে। আইন অমান্য করে জাটকা ধরায় ১ মার্চ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৭১ জেলে আটকের পর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এদিকে দু’মাস বেকার থাকার পর নৌকা ও জাল মেরামত করে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলেরা। সরেজমিনে জেলার আনন্দ বাজার, শহরের টিলাবাড়ী এলাকা, পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, সাখুয়া, বহরিয়া, হরিণা মাছঘাট, আখনের হাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে জাল ও নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। কিছু লোক ঠিক এই সময়ে শুধুমাত্র জাল মেরামত করার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে আসেন।

জেলার প্রায় ৪৪ হাজার নিবন্ধিত জেলে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত নৌ সীমানায় মাছ আহরণ করতে নামবেন। তবে জাটকা রক্ষায় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন নিয়ে অভিযোগ করেছেন জেলেরা। জেলা টাস্কফোর্সের দাবি জাটকা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত ছিল।

সাখুয়া এলাকার জেলে শাহজাহান রাঢ়ী বলেন, সরকার জাটকা না ধরার জন্য যে আদেশ দেয় আমরা তা মানি। কিন্তু মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুরের জেলেরা এসে অধিকাংশ জাটকা ধরে নিয়ে যায়। যে কারণে অভিযান শেষ হলে আমরা কোনো মাছ পাইনা। ঋণ করে নতুন জাল কেনা, নৌকা মেরামত ও এসব কাজে শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। এরপর নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে খুবই খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদেরকে যে পরিমাণ সহায়তা করা হয়। তা দিয়ে কিছুই হয় না। এখনকার বাজারের যে অবস্থা, জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বহরিয়া এলাকার জেলে মো. শাহজাহান খান বলেন, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার যে নির্দেশনা দেয়, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কঠোর হওয়া দরকার। যেন কোনো জেলেই নদীতে নামতে পারে না। আমরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে বসে থাকি। বাইরের লোকজন এসে জাটকা ধরে নিয়ে যায়। এভাবে অভিযান দিয়ে কোনো লাভ হবে না।

চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, জাটকা রক্ষার অভিযানের শুরু থেকে অভিযান চালিয়েছি। এসব অভিযানে জাটকা ধরা অবস্থায় ৪০০ জেলেকে আটক করেছি।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ইলিশ রক্ষায় দু’মাসের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত ছিলো। জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ সবাই মিলে এই অভিযান সফল করেছি। এরপরেও কিছু অসাধু জেলে মাছ আহরণ করেছে।

যার ফলে অভিযানকালে ৩৪৭টি মামলা হয়েছে এবং আটক হয়েছে ৩৭১ জন জেলের। আশা করছি এই অভিযানের ফলে ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। এর সুফল অভিযানের সময় মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলেরা পাবে। জেলেদের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য এ বছর ৪০ কেজি করে ৪ মাস খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top