পবায় ইউপি কমপ্লেক্স থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ২২:৪৬; আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ২২:৪৭

ফাইল ছবি

রাজশাহীর পবা উপজেলায় এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ নভেম্বর) উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কমপ্লেক্সের একটি ঘরে আটক থাকা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিহত যুবকের স্বজনেরা।

উদ্ধার হওয়া লাশটি নাম মোফাজ্জল হোসেন (২৬) বলে জানা গেছে। নিহত মোফাজ্জল পেশায় একজন দিনমজুর। হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামে ১২ দিন আগে তিনি বিয়ে করেন। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার শ্বশুরের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি একজন ভ্যানচালক। মোফাজ্জলের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের যুগলপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ইসরাফিল মন্ডল।

এদিকে, ঘটনার পর পরই রোববার সকাল ১০টার দিকে মুঠোফোন বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল। মোফাজ্জলের শ্বশুরসহ তার পরিবারের সদস্যরাও পালিয়ে গেছেন। তবে এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চেয়ারম্যান মুঞ্জিলের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে।

পলাতক চেয়ারম্যান মুঞ্জিল জানিয়েছেন, কয়েকদিন বিয়ে হলেও রফিকুলের মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। তিনি আর সংসার করতে চাচ্ছিলেন না। দু’দিন আগে মোফাজ্জল তাকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। শনিবার মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন মোফাজ্জলকে তার কাছে রেখে যান। রোববার দুইপক্ষের লোকজনদের নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহের বিষয়ে মিমাংসায় বসার কথা ছিল। এ জন্য রাতে মোফাজ্জল হোসেনকে ইউপি ভবনের একটি কক্ষেই রাখা হয়। রোববার ভোররাতে দায়িত্বরত গ্রামপুলিশ জানালা দিয়ে মোফাজ্জলের ঝুলন্ত লাশ দেখে তাকে খবর দেন। পরে তিনি বিষয়টি থানায় অবহিত করেন। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।

মোফাজ্জলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করেছেন নিহতের চাচাতো ভাই উজ্জল আলী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মোফাজ্জলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, মোফাজ্জল ও তার স্ত্রীর কলহ নিয়ে শনিবারও তারা ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলেন। তখন চেয়ারম্যান তাদের বলেছিলেন, দেনমোহরের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ভরণপোষণের আরও ১০ হাজার টাকা দিয়ে তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জলকে নিয়ে যেতে হবে। রোববারের মধ্যে টাকা না দিলে মোফাজ্জলকে মাদকদ্রব্য দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হবে। রোববার টাকা না আনা পর্যন্ত সে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনেই আটক থাকবে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাজশাহীর দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, জানালায় লেপের একটি ছেঁড়া অংশ গলায় পেঁচানো অবস্থায় মোফাজ্জলের লাশ ঝুলছিল। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও লাশ নামাননি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) খবর দেয়া হলে তারা গিয়ে লাশ নামান। এরপর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। ওসি বলেন, লাশের সুরতহালের সময় শরীরে দৃশ্যমান কোন আঘাত দেখা যায়নি। তবে তাকে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনেরা। তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মোফাজ্জলের হত্যার রহস্য ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা যাবে বলে জানান ওসি। তিনি আরো জানান, তবে চেয়ারম্যানকে দেখা যাচ্ছে না। নিহত মোফাজ্জলের শ্বশুড়বাড়ির লোকজনও পলাতক। মোফাজ্জলের মৃত্যুর ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

 

  • এসএইচ

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top