অর্জিত হবেনা লক্ষ্যমাত্রা

রাজশাহীতে তীব্র খরায় আউশ চাষ নিয়ে বিপর্যয়ের শঙ্কা

বিশেষ প্রতিনিধঃ | প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৪ ২০:২১; আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ১৬:৪৯

ফাইল ছবি

বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে তীব্র খরায় আউশ চাষ নিয়ে বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত প্রায় দুই মাস ধরে ধানচাষ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অর্ধেকের কিছু বেশি জমিতে আউশের চারা রোপন করতে পেরেছেন কৃষকরা। এখনো রাজশাহীতে কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়া এর অন্যতম কারণ। ফলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আউশ ধান চাষের যে লক্ষমাত্রা নির্ধরণ করেছেন তা অর্জিত হবেনা বলে অনুমাণ করা হচ্ছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে গত দুই মাসে চাষ হয়েছে মাত্র ৩১ হাজার হেক্টরের একটু বেশি জমিতে। এদিকে আগামী এক মাসের মধ্যে শুরু হবে আমন ধান চাষ। কিন্তু এখনো রাজশাহীতে কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধানের বীজতলাও প্রস্তুত করা যাচ্ছে না।’ বাংলাবর্ষ অনুযায়ী এখন আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময় অতিক্রম করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা নাই। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে একদিন মাঝে মাঝারি বৃষ্টি হলেও এর পর থেকে টানা বৃষ্টিহীন অবস্থায় কাটছে যেন রাজশাহী। দুই-একদিন বৃষ্টি হলেও সেটি ছিল পরিমাণে খুবই সামান্য। এতে করে রাজশাহী জেলাতে আউশ ধানচাষ নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। গত প্রায় দুই মাস ধরে ধানচাষ শুরু হলেও কৃষকরা এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অর্ধেকের কিছু বেশি জমিতে আউশের চারা রোপন করতে পেরেছেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, আশু (দ্রুত) ফসল উৎপন্ন হওয়ার বিচারে এই ধানের নাম করা হয়েছে আউশ। এই ধান সাধারণত জন্মে বর্ষাকালের আষাঢ় মাসে। এই কারণে এর অপর নাম আষাঢ়ী ধান। তবে এই ধান বৎসরের যে কোন সময়েই চাষ করা যায়। বাংলাদেশে আউশ ধানের যে নামগুলো পাওয়া যায়, তা হলো- আটলাই, কটকতারা, কুমারী, চারনক, দুলার, ধলাষাইট, ধারাইল, পটুয়াখালি, পশুর, পানবিড়া, পাষপাই, পুখী, মরিচবেটি, হরিণমুদা, হাসিকলমি, সূর্যমুখ ইত্যাদি।

অপর দিকে সাধারণত নিচু জমিতে বরো ধানের চাষ করা হয়। বোরো মূলত রোপণ করে চাষ করা হয়। সে কারণে একে রোপা ধান হিসাবেও কোনো কোনো অঞ্চলে অভিহিত করা হয়। তবে বসন্তকালে এই ধান জন্মে বলে একে বাসন্তিক ধানও বলা হয়। এই জাতীয় ধানের নামগুলো হলো আমন বোরো, খৈয়াবোরো, টুপা, পশুশাইল, বানাজিরা, বোরোবোরো ইত্যাদি।

কৃষকরা জানান, যারা জমিতে আউশ চারা রোপন করেছেন, বৃষ্টির ওভাবে তাদের জমিতে স্যালো মেশিন বা গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সেচ দিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়দিন পরেই শুরু হবে আমন চাষ। আমন চাষের জন্য বীজতলা প্রস্তুত করতেও হচ্ছে জমিতে পানি সেচ দিয়ে। এতে বাড়তি খরচ যেমন হচ্ছে, তেমনি ধানের চারা ঠিকমতো উৎপাদন হবে কিনা সেটি নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা গণমাধ্যম কে বলেন, ‘চলতি বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। বৃষ্টির অভাবে মাঠÑঘাট শুকে চৌচির হয়ে আছে। যার কারণে ধানচাষে ব্যাঘাত হচ্ছে। যেসব জমিতে কৃষকরা আউশের চারা রোপন করেছেন, সেসব জমিতে ধান বাঁচাতে সেচের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নাও হতে পারে।’ উল্লেখ্য, এ বছর জেলায় আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে গত দুই মাসে চাষ হয়েছে মাত্র ৩১ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে।
 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top