সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনার পানি, বিলীন হচ্ছে গ্রাম

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৪ ১৪:০৫; আপডেট: ৪ জুলাই ২০২৪ ১৫:৪৪

ছবি: সংগৃহিত

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণের মধ্যে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে বিলীন হচ্ছে শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

সোমবার সকাল পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১২২ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো।

সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে নদীতীরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে নির্দিষ্ট সময় বাঁধ নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবো জানায়, যমুনার ভাঙন ঠেকাতে উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ও খুকনী ইউনিয়নের এনায়েতপুর থেকে পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় নদী খননসহ বাঁধ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৭ কোটি টাকা।

২০২১ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। ফলে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

চলতি মৌসুমে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদী তীরের শত শত বসতবাড়ি ও বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

ভাঙন অব্যাহত থাকায় এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা অন্যত্র ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড় বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পাকড়তলা গ্রামের ফজল আহমেদ, লাল মিয়া এবং ভেকা গ্রামের সুজাব আলীসহ বাসিন্দাদের অভিযোগ, চলতি মৌসুমে নদী ভাঙনে অন্তত তিনশত ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। বহু মানুষ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।

ভূমিহীন অসহায় পরিবারগুলোর পাশে কেউ দাঁড়ায়নি; পাউবোর ঠিকাদাররা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ শেষ করত, তাহলে এই সর্বনাশ হত না বলে ভাষ্য তাদের।

জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ জানান, নদী ভাঙনে খুকনী, কৈজুরী ও জালালপুর ইউনিয়ন খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কয়েক বছরে জালালপুর ইউনিয়নের পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলের শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।

তিন বছরেও বাঁধ নির্মাণ শেষ না হওয়ায় নদী তীরের বাসিন্দাদের এমন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে ভাষ্য এই জনপ্রতিনিধির।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় প্রকল্প এলাকার হাটিপাচিলের ৩০০ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ঘটনাস্থলে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “সাড়ে ৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও নদী খননসহ অন্যান্য মিলে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৭ কোটি টাকা। ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।”



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top