রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের ২৩ ট্রেনসহ ৫৪টি স্টেশন বন্ধ

যাত্রী পরিবহণে অতিরিক্ত লোকসান, চালক ও ইঞ্জিন সংকটসহ নানা অজুহাতে রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলের ২৩ টি ট্রেনসহ ৫৪টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রেল পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এসব ট্রেন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, নানাবিধ সংকটে গত তিন বছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২৩টি ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রী খাতে অতিরিক্ত লোকসান, চালক ও ইঞ্জিন সংকটসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এসব ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত ১৫ আগস্ট থেকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসও বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীখাতে আয় কমের কারণে চন্দনা-ভাঙ্গা কমিউটার ও উত্তরা এক্সপ্রেস এবং নাশকতা এড়াতে ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটের লোকাল-৫৬৩/৫৬৪ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনের কোচ, ইঞ্জিন ও ক্রু সংকটে লোকাল-৫১৫, লোকাল-৫১১/৫১২, লোকাল-৫৪১/৫৪২, লোকাল-৫৯১/৫৯২, লোকাল-৪১১/৪১২, লোকাল-৪৫৩/৪৫৪, লোকাল-৪৩১/৪৩৪, লোকাল-৪৮১/৪৮২, লোকাল-৪১৫/৪১৬/৪২১/৪২২, মিশ্র-৪৫১/৪৫২, মিশ্র-৪৩২/৪৩৩, মিশ্র-৪১৩/৪১৪, উত্তরবঙ্গ মেইল ও পার্বতীপুর কমিউটার বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া মেরামতে থাকায় রংপুর কমিউটার ও পঞ্চগড় কমিউটার বন্ধ রয়েছে।

তথ্যমতে, রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে মোট ১৭৫টি স্টেশন রয়েছে। লোকবলের অভাবে ১২১টি চালু ও ৫৪টি স্টেশন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চালু থাকা স্টেশনগুলোতেও দুর্ভোগের নানা অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। বন্ধ স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি হয় না। এ জন্য টিটি ও যাত্রীদের ট্রেনে উঠে টিকিট কাটা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ ছাড়া অনেক যাত্রী বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেলওয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে, কিছু উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবিকভাবে খুব বেশি সুফল বয়ে আনেনি। নানা সময়ে এসব উদ্যোগ হোঁচট খায়। চালু হওয়ার পর নানা অজুহাতে এখন পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২৩টি ট্রেন এবং ৫৪টি স্টেশন বন্ধ হয়েছে। এসব ট্রেন বন্ধ থাকায় ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। পাশাপাশি চাপ বেড়েছে আন্তঃনগর ট্রেনে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের দাবি, অবিলম্বে রেলসেবা নির্বিঘ্ন রাখতে প্রতিটি ট্রেন চালু করা খুবই জরুরি। কিন্তু যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও সেগুলো চালু করার বিষয়ে তেমন উদ্যোগ নেই।

এ বিষয়ে পশ্চিম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানায়, ‘বন্ধ স্টেশন ও ট্রেনের নির্দিষ্ট তথ্য এখন মনে নেই। তবে বন্ধ বেশ কয়েকটি স্টেশন চালু হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো, আমাদের লোকবলের সংকট রয়েছে। আর কিছু ট্রেন বন্ধ হলেও নতুন ট্রেনও আমরা চালু করেছি।