ইআরডি’র সঙ্গে বৈঠক

বৈদেশিক ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য চায় আইএমএফ

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:০৬; আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৩২

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ কী পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে তার ডাটাবেজের তথ্য চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।এ ছাড়া ডাটাবেজে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেটিও জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা সংস্থাটির প্রতিনিধি দল।

বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে বৈঠকে এসব তথ্য চাওয়া হয়। খবর যুগান্তরের। 

এ প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, ‘আইএমএফ আমাদের কাছে ঋণসংক্রান্ত ডাটাবেজ নিয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা তা নিয়েই আলোচনা করেছি। রিপেমেন্ট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের রিপেমেন্ট এখন পর্যন্ত ক্লিয়ার। এ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে ডাটাবেজের কোন পদ্ধতি ব্যবহার করি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশ আংকটাডের পদ্ধতি অনুসরণ করে।’

বৈঠকে প্রতিনিধি দল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কাছে বৈদেশিক অর্থ কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে খরচ করতে না পারার কারণ জানতে চেয়েছে। এক্ষেত্রে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) কত টাকা ধরা হয়েছিল। সেখান থেকে কত টাকা ছেঁটে সংশোধিত এডিপি করা হয়েছে এসব বিষয়ে তারা প্রশ্ন তোলেন। এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার প্রসঙ্গে ইআরডির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলকে বিস্তারিত জানানো হয়। এক্ষেত্রে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা।

সেখানে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান মিলে ধরা হয়েছিল ৯২ হাজার ২০ কোটি টাকা। কিন্তু এডিপি সংশোধনের সময় কাটছাঁট করা হয় ১৯ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক অংশে বাদ যায় ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অর্থ খরচের লক্ষ্য ধরা হবে ৯৪ হাজার কোটি টাকা। এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়িয়ে পাইপলাইনে জমে থাকা অর্থের ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

ইআরডির একাধিক সূত্র জানায়, আইএমএফ’র কারিগরি সহায়তা ব্যবহারের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের (স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ) বর্তমান অবস্থা এবং উত্তরণ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছে।

এদিন বিকালে পরিকল্পনা কমিশনের একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। এসপিএসআইএস প্রকল্পের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এখন পর্যন্ত আইএমএফ’র কর্মসূচির আওতায় কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে সেসব বিষয় জানতে চান। সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার নানা বিষয়েও তারা খোঁজখবর নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংক খাতের উল্লেখযোগ্য সংস্কারসহ সব ধরনের শর্ত প্রতিপালন হচ্ছে কিনা-তা খতিয়ে দেখতে ‘সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া চেয়েছিল আইএমএফ। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়ে সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে জানতে চেয়েছে বর্তমান রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের সর্বশেষ অবস্থা।

ইআরডি’র এক সূত্র জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে অ্যাডজাস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছে প্রতিনিধি দল। জানা যায়, আইএমএফ’র ঋণ নিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শর্তগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আর্থিক খাতের মধ্যে আবার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ব্যাংক খাত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে।

এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত অর্জন এবং আগামী জুন ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সেগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি যাচাই করছে এবারের মিশন। এছাড়া ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে যেসব শর্ত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে সরকার, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আসছে বাজেটে কী কী উদ্যোগ থাকছে, তাও পর্যালোচনা করা হবে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top