বরিশালে ডেঙ্গুতে এক দিনেই ৭ জনের মৃত্যু সরকারী হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়াল

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৮; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৫৮

ছবি: প্রতীকী

বরিশালে ডেঙ্গু আক্রমনে মৃত্যুর মিছিল দ্রুত লম্বা হচ্ছে। বুধবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় ৭জন সহ গত ৩ দিন ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে মশক বাহী এ মরন ব্যাধীতে। এ নিয়ে গত কয়েক মাসে বরিশাল বিভাগের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ১৮ হাজার ১৮৫ জন ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৬৫ জনের মৃত্যু হল।

মৃত ৭ জনের মধ্যে বরিশাল মহানগরীর কাউনিয়া ও সাগরদীতে দুজন ছাড়াও জেলার বাকেরগঞ্জ, বানরীপাড়া ও মেহেদিগঞ্জের ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা ও বরগুনার আমতলীর দুজন জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত ৭ জনের সবাই বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। হাসপাতঅলটির মেডিসেন ওয়ার্ড এখন অনেকটাই মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে।

এ নিয়ে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন সহ বরিশালে মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হল। এছাড়াও পটুয়াখালীর সরকারী হাসপাতালগুলোতে ৪ জন, ভোলাতে ৭ এবং পিরোজপুার ও বরগুনাতে ৫ জন করে মারা গেছেন। বুধবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায়ই এযাবতকালের সর্বাধিক সংখ্যক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হল।

সোমবার পর্যন্ত (১৩ সেপ্টেম্বর) চলতি মৌসুমে বরিশাল বিভাগের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ১৮ সহশ্রাধিক ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১৩ দিনেই প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ভর্তি হয়েছেন। চলতি মৌসুমে মৃত ৬৫ জনের মধ্যে চলতি মাসের ১৩ দিনেই ২৫ জন মারা গেছেন। আর আগষ্টের ৩১ দিনে হাসপাতালে ভর্তিকৃত সাড়ে ৮ হাজার ডেঙ্গু রোগী মধ্যে মারা গেছেন ২৯ জন।

এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসই বরিশাল অঞ্চলে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন। তবে এর পরেও এ অঞ্চল যুড়ে মশক নিধান সহ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তেমন কোন নিবিড় কার্যক্রম লক্ষ্যণীয় নয়। প্রায় ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল মহানগরীতে মশা নিয়ন্ত্রনে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে নগরবাসী সন্তুষ্ট নয়। 

নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ১২টি ফগার মেশিনের ১১টি সচল বলে কতৃপক্ষ দাবী করলেও তার ব্যাবহার নগরবাসী প্রত্যক্ষ করতে পারছেন না। সাথে কয়েকটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে কিছু হ্যান্ড স্প্রেয়ার দেয়া হলেও গত দু মাস কোন ওষুধের সরবারহ নেই বলে অভিযোগ বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলদের। ফলে এ নগরবাসী এখনো মশার জ¦ালায় অতিষ্ঠ। উপরন্তু খাল, ড্রেন ও ঝোপঝাড় গুলো পরিস্কার করার লোকবলের সংকট না থাকলেও আন্তরিকতার ঘাটতিতে নগরী যুড়ে মশার দাপট অব্যাহত রয়েছে। প্রায় একই চিত্র এ অঞ্চলের সবগুলো শহর ও গ্রামঞ্চলেও।

অপরদিকে গত প্রায় সাড়ে ৪ মাসে সরকারী হাসপাতালে ১৮ হাজারেরও বেশী ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও বাস্তবে এর তিন গুন মানুষ মশা বাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত বরিশালে ৬,৭২০, পটুয়াখালীতে ৩,৯৮৯,ভোলাতে ২ হাজার ৬০, পিরোজপুরে ৩ হাজার ৭ এবং বরগুনাতে ১,৯৭৭ ও ঝালকাঠীতে ৪৪২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সরকারী হাসপাতলগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিভাগের ৬টি জেলায় ১ হাজার ১৬০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top