বিশ্বব্যাপী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কতটা প্রভাব রাখে?
রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:০২; আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ১০:১২

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার অন্যতম হাতিয়ার নিষেধাজ্ঞা। বিশেষ করে দেশটির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে মার্কিন প্রশাসন।
এই নিষেধাজ্ঞা হতে পারে পুরো দেশের ওপর অথবা নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর। সাধারণত মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা শাখার বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এসব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপী মার্কিন এসব নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ও কার্যকারিতা ঠিক কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে প্রায়ই।
কোনো দেশ, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বিদেশে থাকা সেই দেশ বা ব্যক্তির সম্পদ জব্দ করা হয়ে থাকে। ফলে দেশের বাইরে থাকা সম্পদ ব্যবহার করতে পারে না নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি। অনেক ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার আওতায় অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন।
ফলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্পদের পাশাপাশি তার পারিবারিক সম্পদও আন্তর্জাতিক লেনদেনে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে ওঠে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেশটির পররাষ্ট্রনীতির একটি অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে সে দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্থগিত করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে অর্থনৈতিকভাবে একটি বড় ধাক্কা খায় নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশটি।
তবে সবসময় এসব নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হয় না। অনেক সময় এসব নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী দেশগুলো আরও ঐক্যবদ্ধ হয় এবং নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়িয়ে তুলে।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অব ফরেইন রিলেশনসের জিওইকোনমিকস বিভাগের সিনিয়র পলিসি ফেলো আগাথি ডেমারাইস জানান, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাষ্ট্রগুলো মার্কিন স্বার্থবিরোধী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে। ফলে বিভিন্ন দেশ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে তারা ক্রমেই চীন ও রাশিয়ার দিকে ঝুঁকতে থাকে।
তবে সব দেশের ক্ষেত্রেই এমনটা হয় না। অপেক্ষাকৃত ছোট অর্থনীতির দেশগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। তবে যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নেই তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা খুব একটা কার্যকর হয় না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আরেকটি বড় দিক হলো- এসব নিষেধাজ্ঞা একই সঙ্গে কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় মার্কিন মিত্ররাও কার্যকর করে থাকে।
ফলে কোনো দেশ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা মানে একই সঙ্গে আরও কয়েকটি দেশের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে যাওয়া। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইরান, উত্তর কোরিয়া, ভেনেজুয়েলা, কিউবার মতো দেশগুলো।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: