জাতিসংঘকে আঞ্চলিক বিরোধের প্রভাবমুক্ত রাখতে শেখ হাসিনার আহবান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘকে একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে আঞ্চলিক বিরোধ যাতে কোন প্রভাব না ফেলে সেজন্য সজাগ থাকতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আহবান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে (বাংলাদেশ সময়) নিউইয়র্কে বিশ্বসংস্থার সদরদফতরে একটি উচ্চপর্যায়ের ভার্চুয়াল সভায় জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এই আহবান জানান।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জাতিসংঘ একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নিজেকে প্রমাণ করবে। প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, দৃঢ়ভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং জাতিসংঘকে সঠিক পথে নিতে বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবসম্মত একটি রূপরেখা প্রণয়ন করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।

মহামারীর প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের গুরুত্ব বেড়ে গেছে বলে জানান শেখ হাসিনা। বিশ্ব মানবতার কল্যাণে জাতিসংঘের কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, ২০৩০ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনকে আরও চ্যালেঞ্জিং করেছে কোভিড-১৯। এটা বর্তমানে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ঘাটতিকে ফুটিয়ে তুলেছে।

তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে জাতিসংঘকে ভূরাজনৈতিক বৈরিতা মুক্ত রাখার জন্য সর্বদা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতাবৃন্দ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সংস্থাকে সার্বিকভাবে মানবকল্যাণের জন্য সত্যিকারের কার্যকর একটি সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলাই সবার দায়িত্ব।

তিনি আরো বলেন, এই বৎসর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী হওয়ায় জাতিসংঘের ৭৫তম বার্ষিকী বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় তিনি ১৯৭৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর দেয়া বক্তব্য উদ্ধৃত করেন: ‘…জাতিসংঘ ভাবীকালের দিকে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সমুজ্জ্বল রাখিয়াছে।’

বাংলাদেশ জাতিসংঘের কাছে ঋণী উল্লেখ করে দেশপ্রধান বলেন, আমাদের উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টাগুলো থেকে আমরা উপকৃত হয়েছি। আমাদের দিক থেকেও জাতিসংঘকে তার ম্যান্ডেট পূরণে আমরা ভূমিকা রাখছি।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বিশ্বে শান্তি বজায় রাখার পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে জাতিসংঘের সব শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সৈন্য ও পুলিশ সদস্য থাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শান্তি মিশনে দেশের ১৫০ সৈন্যের প্রাণহানির কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের প্রশাসনিক এই প্রধানকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ ও এর পরবর্তী সময়ের জন্য জাতিসংঘকে সঠিক পথে রাখতে ইউএন ৭৫-এর একটি গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত রূপরেখা দেয়া উচিত, যাতে প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং দৃঢ়ভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা যায়। খবর-যুগান্তর

• এসএইচ