‘এমপি আনোয়ারুলের মরদেহ পাওয়া যায়নি’

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৪ ১৯:৫৭; আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ১১:৩২

- ছবি - ইন্টারনেট

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের ৮ দিন পর কলকাতার একটি এলাকায় খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশ পুলিশ ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশের সূত্রগুলো বলেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তবে বুধবার ভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার যে ফ্লাটে এমপি আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে, সেখানে তার মরদেহ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

এবিপি আনন্দ বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। আনোয়ারুল আজীম আনারকে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের যে অ্যাপার্টমেন্টে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল, সেখানে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে।

ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলেছে, কলকাতায় আনোয়ারুল আজীম আনারের নিখোঁজ হওয়া ও কথিত হত্যাকাণ্ডের পরিস্থিতি এখনও রহস্যে ঘেরা। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে এবিপি আনন্দ জানিয়েছে, তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আওয়ামী লীগ দলীয় এই সংসদ সদস্য। এরপর ১৬ মে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। পরে ১৮ মে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন সংসদ সদস্যের পরিচিত ভারতের বরানগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস। নিখোঁজ হওয়া আনোয়ারুল আজিম আনারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে কলকাতা পুলিশ।

দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা পুলিশ বুধবার আনোয়ারুল আজীমের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের এই নেতার মোবাইল ফোনও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

তবে বাংলাদেশি এই এমপি খুন হয়েছেন বলে ধারণা করছে কলকাতা পুলিশ। তার মরদেহ কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে। তল্লাশি অভিযানের সময় তারা নিউ টাউনের একটি ফ্লাটে রক্তের দাগও দেখতে পেয়েছেন।

ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম গত ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান।

পরের দিন, ১৩ জুন চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন।

চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আজিম তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছিলেন।

গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় এমপি আনোয়ারুল গোপালকে বলেন, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সাথে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।

১৭ জুন আনোয়ারুলের পরিবার তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে বলেন, তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিনই ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনোয়ারুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

ভারতের পুলিশের একটি সূত্র ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছে, বাংলাদেশে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাংলাদেশ পুলিশের কাছে আনোয়ারুল আজিমকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। কলকাতার পুলিশ কর্তৃপক্ষকেও একই কথা জানানো হয়েছে।

তবে নিউ টাউনের কোনও এলাকা থেকেও এখন পর্যন্ত আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমও। ইন্ডিয়া টুডে বলছে, এই ঘটনায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় তদন্ত করছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top