ইয়াসের প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চল এবং উপকূলীয় সব অঞ্চলে

রাজটাইমস ডেক্স | প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২১ ১৩:৪৬; আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৩:৫৩

 ছবি : সংগৃহীত

চন্দ্রগ্রহণের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণায়মান প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আজ বুধবার সকালে উঠে আসবে স্থলভাগে। উড়িষ্যার বালাসর ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের প্যারাদ্বীপ এবং সাগর আইল্যান্ডের মাঝখান দিয়ে উঠে আসার সময় গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার সাথে সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার উঠতে পারে বলে ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে। উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল দিয়ে উঠে এলেও প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চল এবং উপকূলীয় সব অঞ্চলে। ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

এ দিকে আজ বিকেল ৫টা ৯ মিনিটে শুরু হবে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ, শেষ হবে সন্ধ্যা ৭টা ৫১ মিনিটে। চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশের সর্বত্র দেখা যাবে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর। পূর্ণিমার এ সময়ে এমনিতেই সমুদ্র উত্তাল থাকে। ঝড় ও চন্দ্রগ্রহণ দুটোই আন্দোলিত করবে উপকূলীয় এলাকা। ইয়াসের প্রভাবে দেশের সর্বত্রই ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।


এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান তাপপ্রবাহ কেটে বৃষ্টিপাত ও ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সারা দেশে তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে।
ইয়াস আজ সকাল সাড়ে ৫টায় উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল স্পর্শ করেছে এবং দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগের দিকে যেতে থাকবে। তবে ইয়াস পূর্বের নির্দেশিত গতিপথ থেকে কিছুটা উত্তর-পূর্ব দিকে সরে এসেছে। ফলে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলেও কিছুটা ঝাপটা লাগার আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল বিকেল দিকে ঘূর্ণিঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারের নিচে।

আবহাওয়া দফতর জানায়, ইয়াসের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলাবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।


ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিমানবাহিনী : আইএসপিআর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদর দফতরের তত্ত্বাবধানে ‘বিএএফ সেন্ট্রাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল রুম’ খোলার পাশাপাশি বিভিন্ন ঘাঁটিতে ২৪ ঘণ্টা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য অপস্ রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও রেকি মিশন, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অপারেশন এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিমান ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।



বিষয়: আবহাওয়া


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top