নেত্রকোনা ও মাগুরায় বিএনপির সাথে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৩৩; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৫

ছবি: ফাইল

নেত্রকোনা ও মাগুরায় গতকাল বিএনপির র্যালি চলাকালীন বিএনপি-আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউন।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ।

এতে গুলিবিদ্ধসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সদরের মধ্যবাজার মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলা সদরের মধ্যবাজার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হলে বাধা দেয় পুলিশ। ওই সময় মিছিল নিয়ে সেখানে আসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের ৩০ জন আহত হন।

কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ খায়ের বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মধ্যবাজারে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সড়কে অবস্থান নেয়ায় বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম দিকের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে আসতে পারেননি। বাজারের পশ্চিম দিকে মারকাস মসজিদ মোড়ে অবস্থান করছিলেন আমাদের নেতাকর্মীরা। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সময়ে আমাদের ওপর গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে যুবদল নেতা তাইমুল, খোকন, স্বপন, মামুন, সবুজ, সোহানুর ও কাশেম গুলিবিদ্ধ হন। সেই সাথে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রসুল, সদস্যসচিব শেখ রবিন মোবারক, বদির জামাল, রিপন, মাসুদ ও রুবেলসহ ২২ জন আহত হন। তাদের নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল ও দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: ইসলাম উদ্দিন বলেন, বিএনপির লোকজন লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করেছেন। এতে সদর ইউনিয়নের সদস্য এমদাদুল হক আহত হন। তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি ও মিডিয়া) মো: লুৎফর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, মারকাস মসজিদ মোড় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠি ও অস্ত্রসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করতে চান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের আটকাতে চাইলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এ দিকে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দেলের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় গুলিবিদ্ধসহ দলের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল মহম্মদপুর বাজারে উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য আহত এবং বিএনপির তিন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের একটি গাড়ি ও দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেলে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির উদ্দেশ্যে মাগুরা-মহম্মদপুর সড়কের পল্লী বিদ্যুতের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে মহম্মদপুর বাজারে উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে তাদের সভা হওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিথুন রায় চৌধুরী বলেন, বাজারের মধ্যে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ তাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করে এবং শোভাযাত্রায় বাধা দেয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা ও ক্যাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। একই সময়ে আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ ঘটনাস্থলে এলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পেছন থেকে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন। বিএনপি নেতাদের দাবি, ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলায় অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কলিমুল্লাহ বলেন, ঠিকঠাকভাবেই বিএনপির সভা চলছিল। একপর্যায়ে পেছন থেকে একটা গ্রুপ পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে এবং পুলিশের একটি গাড়ি ও দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছোড়ে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top