তফসিল পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগে সতর্কতা

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৯; আপডেট: ৫ মে ২০২৪ ১৪:৫৩

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলগুলোর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে দলীয় করণীয় নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দলটির নেতারা। সারা দেশে নেতাকর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বিশেষ বার্তা ও এসএমএস দেয়া হচ্ছে।

নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচন বানচালের খেলায় মেতেছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। তারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। এজন্য যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে নিজেরা ক্ষমতার আসনে বসতে চায়। দেশে যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

বিশেষ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একযোগে কর্মসূচি দিতে পারে। এমন আশঙ্কা রয়েছে আমাদের।

বিষয়টি দলের জন্য চিন্তারও কারণ। তাই জনগণের জানমাল রক্ষায় আওয়ামী লীগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। এরই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অবস্থিত দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমণ্ডিতে থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ঘিরে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন নেতাকর্মীরা।

তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা এখানে নিয়মিত অবস্থান করবেন। প্রশাসনের পাশাপাশি রাজধানীতে থাকা বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘিরে থাকবে যুবলীগের মহড়া। অলিগলিতে যেন কোনো অরাজকতা তৈরি হতে না পারে সেদিকে যুব মহিলা লীগসহ অন্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে রাজধানীর আশেপাশে থাকা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জের নেতাদের তফসিল ঘোষণার পরই এলাকা পাহারা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত সাভার ও আশুলিয়ায় থাকা নেতাদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তফসিল ঘোষণার পর গার্মেন্টস শ্রমিকদের দিয়ে কেউ যেন কোনো ধরনের আন্দোলন বা নাশকতা করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

দলটির নেতারা বলেন, আজ বা আগামীকাল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এরপরই হয়তো বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলো আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। এ কারণে কেন্দ্র থেকে আমাদের বাড়তি সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে তফসিলের পর দেশের পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হতে পারে সে আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন দু’একদিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল দিতে পারে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া আওয়ামী লীগ কোনোদিন সরকার গঠন করেনি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তাবেই সবকিছুর সংস্কার করা হয়েছে। নির্বাচন বানচাল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি।

এদিকে খুলনার জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সব অপশক্তি আমাদের সামনে ভেঙেচুরে যাবে। আপনারা শুধু সাহস নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াবেন। আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ, ছাড়া হবে না। এই দুষ্কৃতকারীদের আমরা ক্ষমা করবো না।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আমরা আশা করছি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। বর্তমান টালমাটাল বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠবে না। তারা ন্যূনতম দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন।

তাছাড়া তাদের প্রভুরা প্রচুর চেষ্টা করছেন যেন নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় এবং বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। সরকারও নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ইসিকে উদারভাবে সকল সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। পরিস্থিতির অনেক উন্নয়ন হচ্ছে।

তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি শিথিল কর্মসূচির মধ্যদিয়ে নির্বাচনে চলে আসবে। যদি না আসে, বিশৃঙ্খলার পথ বেছে নেয়, তাহলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সদা প্রস্তুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ জানান, তফসিল ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। অতীতের মতোই নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top